ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চারজন শ্রমিকের নাম ফারাদ হোসেন, রাজ্জাক হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও বাবুল রহমান। বাড়ি হরিরামপুরের নাকর এলাকায়। শনিবার সকালে এলাহাবাদ থেকে হরিরামপুরে এসেছিলেন চারজন হকার। তাঁরাও সোজা কাকভোরে হাসপাতালে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। এদিন তাঁদের বাকি সঙ্গীরাও গ্রামে এসে পৌঁছান। রাস্তায় বাকিদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এদিন বাকি চারজন সাইকেল নিয়ে গ্রামে আসলেও সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন না করে সচেতন নাগরিকের মতো নিজেরাই স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোয়ারান্টাইন সেন্টারে চলে গিয়েছেন। রাজ্যেজুড়ে একাধিক জায়গায় যখন কোয়ারান্টাইনে থাকার কথা বললেও অনেকেই সচেতনতার অভাবে সেই নির্দেশ পালন করছেন না, তখন এই শ্রমিকদের এই পদক্ষেপ দৃষ্টান্তমূলক বলে মনে করছে স্বাস্থ্যদপ্তর। এলাহাবাদ থেকে সাইকেল চালিয়ে ফিরেও ক্লান্ত শরীরে বাড়ি না গিয়ে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে চলে গিয়ে তাঁরা সচেতনতার নজির গড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্জাক হোসেন বলেন, আমাদের বাকি সঙ্গীরা শনিবার গ্রামে এসেছেন। তাঁরা হাসপাতালের নির্দেশে কোয়ারান্টাইনে আছেন। আমরা পথ হারিয়ে ফেলার কারণে একটু সমস্যায় পড়েছিলাম। জেলায় আসার আগে থেকেই হরিরামপুরের ডাক্তারবাবুর নম্বর আমাদের কাছে ছিল। ডাক্তারদের ফোন করে জানিয়েছিলাম যে আমরা গ্রামে যাচ্ছি। রাস্তায় ফোনের চার্জ ফুরিয়ে ফোন বন্ধ হয়ে যায়। তাই গ্রামে ফিরে আর ডাক্তারবাবুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। সেজন্য ভোরবেলায় ফিরে গ্রামের বাইরে মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে এক গ্রামবাসীর ফোন থেকে ডাক্তারবাবুদের সঙ্গে কথা বলি। আমাদের দানগ্রামে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের চলে যেতে বলা হয়। হাসপাতাল গাড়ি পাঠাতে চাইলেও আমরা না করেছি। যদি ভাইরাস আমাদের থাকে তো গাড়িতেও ছড়িয়ে যেতে পারে। ডাক্তারবাবুরা আমাদের চিকিৎসা করে সেন্টারে রেখে দিয়েছেন। খাওয়া দাওয়া দিয়েছেন। বর্তমানে আমরা ভালোই আছি। ১৪ দিন পরেই বাড়ি ফিরব।
গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক মানবেন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমাদের জেলার চার শ্রমিক এলাহাবাদে কাজ করতেন। তাদের মধ্যে চারজন গত শনিবার ফিরেছেন। বাকি চারজন এদিন সকালে এসে মাঠে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। ডাক্তারের নির্দেশ মতো কোয়ারেন্টাইনে চলে যান। তাঁরা তেমন শিক্ষিত না হলেও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। সরকারি নিয়ম তাঁরা যেভাবে পালন করেছেন, তাতে আমরা গর্বিত যে এধরণের লোক আমাদের জেলায় রয়েছেন।
হরিরামপুরের বিএমওএইচ সৌভিক আলম বলেন, এলাহাবাদ থেকে যাঁরা এসেছেন তাদের আমি বিগত দিনে চিকিৎসা করেছি। তাঁরা এলাহাবাদ থেকে আসার পথে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর থেকে তাঁদের সঙ্গে আমি নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলি। এদিন সাইকেল নিয়ে গ্রামে ফিরলেও আমার সঙ্গে কথা না বলে গ্রামে ঢোকেননি তাঁরা। এমন সচেতনতা সকলের মধ্যে গড়ে উঠলে আমরা করোনার মোকাবিলায় সাফল্য পাবই।