বিএনএ, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি শহরে ফের এটিএম লুটের চেষ্টায় শনিবার সকালে দেশবন্ধুপাড়ায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। দুষ্কৃতীরা এটিএমের মনিটর ভেঙে ফেলে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, মনিটর ক্ষতিগ্রস্ত করা হলেও দুষ্কৃতীরা টাকা নিয়ে যেতে পারেনি। দেশবন্ধুপাড়ার গোপাল মোড়ের মতো জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় সাতসকালে কৌতূহলী বাসিন্দারা ভিড় জমান। শিলিগুড়ি থানা থেকে পুলিস এসে তদন্তের স্বার্থে ওই এটিএম থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। মাস কয়েক আগে শহরের ডাবগ্রামে একটি ব্যাঙ্কের এটিএমে দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল। তার আগে মেশিন তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও এই শহরে ঘটেছে। কিছুদিন আগে দু’টি এটিএমের বাইরে স্কিমার পাওয়া যায়। এত সবের পরেও এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তৃণমূল কংগ্রেসের স্বপন দাস বলেন, আমি খবর পেয়ে এসে দেখি এটিএমের মনিটর খোলা রয়েছে। পুলিসকে খবর দেওয়া হলে শিলিগুড়ি থানা থেকে পুলিস এসে তদন্তে নামে। আমার ওয়ার্ডে এনজেপি মেইন রোডে ৩০০ মিটারের ব্যবধানে পাঁচটি এটিএম কাউন্টার আছে। ওয়ার্ডে এর আগে এমনটা হয়নি।
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস কমিশনারেটের সহকারী পুলিস কমিশনার সুরিন্দর সিং বলেন, পুলিস কর্মীরা তদন্তের স্বার্থে সেখানে যান। কোনও টাকা চুরি না হলেও গোটা বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। ভিডিও ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুলিসকে তদন্তের স্বার্থে সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক লক্ষ্মী মাহাত বলেন, ব্যাঙ্ক এবং এটিএমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবিতে আমাদের সংগঠনের ধারাবাহিক আন্দোলন চলছে। প্রযুক্তিগত কৌশলকে কাজে লাগিয়ে যেসভাবে প্রতারণা হচ্ছে তাতে প্রতিটি এটিএমেই নিরাপত্তারক্ষী রাখা দরকার। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলি তা রাখছে না। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কেও নিরাপত্তারক্ষী তুলে দেওয়া হচ্ছে। এসব নিয়ে সরকারকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় এটিএমে দীর্ঘক্ষণ বসে থেকে দুষ্কৃতীরা অপরাধমূলক কাজকর্ম করে নিরাপদে চলে যেতে পারছে।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনগামী এনজেপি মেইন রোডে দিন-রাতে সর্বক্ষণই যানবাহন চলাচল করে। দেশবন্ধুপাড়ার গোপাল মোড়ের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে সকালে টাকা তুলতে গিয়ে এক গ্রাহক দেখেন এটিএমের মনিটরটি খোলা অবস্থায় রয়েছে। তিনি বাইরে বেরিয়ে ওই এটিএম কাউন্টারের বাইরে চায়ের দোকানদারের নজরে বিষয়টি আনেন। এরপরই বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। স্থানীয়রা সেখানে এসে ভিড় করেন। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার স্বপনবাবুর বাড়ি থেকে ২০ মিটারের মধ্যেই ওই এটিএম কাউন্টারটি থাকায় তিনিও খবর পাওয়া মাত্রই চলে আসেন। পুলিসকেও খবর দেন। শিলিগুড়ি থানা থেকে পুলিস এসে ঘটনার তদন্তে নামে। ওই এটিএম কাউন্টারের সিসিটিভির ফুটেজ পুলিস সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মাস কয়েক আগে ডাবগ্রামে দুষ্কৃতীরা এটিএমের সিসিটিভি ক্যামেরায় কালো রং স্প্রে করে ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করেছিল। তারআগে দু’টি মেশিন এটিএম কাউন্টার থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।