কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
এই অবস্থায় দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিতাবাঘের চাপ কমাতে সেন্ট্রাল জু অথরিটির অনুমোদন নিয়ে বন দপ্তর এখানকার চিতাবাঘগুলিকে রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ চিতাবাঘ চেয়ে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করেছে।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, যেভাবে পর পর চিতাবাঘ খাঁচা বন্দি হচ্ছে তাতে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিকাঠামোগত সমস্যা হচ্ছে। চিতাবাঘের খাবার জোগাড়ে যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি খরচের বহরও বাড়ছে।
ডিএফও বলেন, এই অবস্থায় সেন্ট্রাল জু অথরিটির অনুমোদন নিয়ে ওই ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকা কয়েকটি চিতাবাঘকে বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চিতাবাঘ চেয়ে ছ’টি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই আমাদের কাছে আবেদনও করেছে।
বন দপ্তর সূত্রে খবর, সেন্ট্রাল জু অথরিটি অনুমতি দিলে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রের কয়েকটি চিতাবাঘকে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কের পাশাপাশি পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম সহ দক্ষিণবঙ্গের ছোটখাটো কয়েকটি চিড়িয়াখানায় পাঠানো হবে। রাজ্যের বাইরে অন্য রাজ্যের চিড়িয়াখানার জন্যও পাঠানো হবে।
গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে মাদারিহাটের কয়েকটি চা বাগানে চিতাবাঘ ত্রাস হয়ে উঠেছিল। গত ১৭ ডিসেম্বর দিনের বেলাতেই গ্যারগেন্দা চা বাগানের বাসিন্দা গীতা প্রজা(১৯) নামে এক তরুণীকে খুবলে খেয়েছিল চিতাবাঘ। তারপর থেকেই মাদারিহাটের গ্যারগেন্দা, তুলসীপাড়া, রামঝোরা, ধুমচিপাড়া, হান্টাপাড়া ও লংকাপাড়া চা বাগানে চিতাবাঘের আতঙ্ক শ্রমিকদের মধ্যে জাঁকিয়ে বসে।
চিতাবাঘ ধরতে লংকাপাড়া রেঞ্জের এই বাগানগুলিতে বনদপ্তর ছাগলের টোপ দিয়ে একাধিক খাঁচা বসায়। ছাগলের পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে কথা বলা পুতুলেরও টোপ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও খাঁচাতেই চিতাবাঘ ধরা পড়েনি। এরপর বন কর্মীরা রাতে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়ে চিতাবাঘকে বাগে আনারও চেষ্টা করে। কিন্তু সেই চেষ্টাও ফলপ্রসূ হয়নি। এমনকী চিতাবাঘকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে কাবু করতে বন কর্মীরা রাতে বন্দুক হাতে নিয়ে সরাসরি ছাগলের টোপ দেওয়া খাঁচায় ঢুকে অপেক্ষা করেও চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু সেই চেষ্টাও বিফল হয়।
অবশেষে সোমবার ভোরে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ ধরা পড়ায় চা শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরল। তবে সোমবার ধরা পড়া চিতাবাঘটিই মানুষখেকো কি না তা নিয়ে কিছু বলতে চায়নি বনদপ্তর। শ্রমিকদের মধ্যেও এনিয়ে নানাকরম মত আছে। শ্রমিকদের অনেকেই বলছেন, ধরা পড়া চিতাবাঘটি মানুষখেকো হলেও হতে পারে। বাগানগুলিতে আরও চিতাবাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। ডিএফও বলেন, সোমবারে ধরা পড়া চিতাবাঘটিই মানুষখেকো কি না এটা কোনওভাবেই বলা যায় না।