বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
ভেটাগুড়ির জিলাপি ব্যবসায়ী অসিত নন্দী বলেন, আমার ঠাকুরদা বিধুভূষণ নন্দী বহু বছর আগে ভেটাগুড়িতে মিষ্টির দোকান করেছিলেন। সেই সময়েই তিনি এই জিলাপি বিক্রি করতেন। আমাদের জিলাপি সেই সময়কার ফর্মুলা মেনেই এখনও তৈরি করা হয়। ভেটাগুড়ির জিলাপি তৈরির উপকরণ ও রস তৈরির ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন রয়েছে। সেসব আমরা এখনও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলি। এখন আমাদের পরিবারে আর কেউ মিষ্টির ব্যবসা করেন না। কিন্তু পুরানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে রাসমেলার সময়ে আমরা এখনও জিলাপি বিক্রি করি।
অসিতবাবুর কাকা বিশ্বজিৎ নন্দী বলেন, বাবার দেখানো ফর্মুলা মেনেই আমরা এই জিলাপি তৈরি করি।
ভেটাগুড়ির জিলাপি তৈরির জন্য যে সব উপকরণ ব্যবহার করা হয় তার পরিমাণ ও গুণগত মানটাই এর স্বাদের ক্ষেত্রে আসল বিষয়। এই জিলাপি খেতে মুচমুচে হয়। এক দিন পর, বাসি হয়ে গেলেও সচরাচর নষ্ট হয় না। এক সঙ্গে কতটা পরিমাণ জিলাপি ভাজা হবে, কতটা উপকরণ এক সঙ্গে মেশানো হবে, কতখানি ঘি, ডালডা, ময়দা, চালের গুঁড়ো মেশাতে হবে—এই বিষয়গুলিই স্বাদ ধরে রাখার আসল রহস্য। রস তৈরির ক্ষেত্রেও কিছু গোপন পদ্ধতি তাঁরা মেনে চলেন।
অসিতবাবুর ঠাকুরদা বা বিশ্বজিৎবাবুর বাবা বিধুভূষণ নন্দী পঞ্চাশের দশকে ভেটাগুড়িতে মিষ্টির দোকান চালু করেন। পরবর্তীতে তাঁর ছেলে দিলীপকুমার নন্দী সেই দোকান চালাতেন। সেই সময় ভেটাগুড়িতে সারা বছর মিষ্টির দোকান চালানোর পাশাপাশি রাসমেলার সময় মেলায় এসে জিলাপির দোকান দেওয়ার প্রচলন ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পরিবারের অনেকেই অন্যান্য পেশায় চলে যান। ফলে ওই মিষ্টির দোকান এখন আর নেই। কিন্তু মেলা আসার আগেই জিলাপির কারিগরেরা মেলায় এই দোকান চালানোর জন্য অসিতবাবুদের বাড়িতে চলে আসেন। তাঁরা বায়না নিয়ে চলে যান।
রাসমেলা চালু হলেই জিলাপির দোকান চালু হয়ে যায়। এবার দোকানে মোট ১২টি বড় বড় উনুন তৈরি করা হয়েছে। সকাল আটটা থেকে প্রায় ৫০ জনের একটি টিম জিলাপি তৈরির কাজে লেগে পড়েন, যা রাত বারোটা পর্যন্ত চলে। মেলার মাঠে সকাল থেকেই ভেটাগুড়ির জিলাপির দোকানের সামনে অনেকে ভিড় জমান। সেখান থেকে সকালের খারাব হিসাবে তারা জিলাপি কিনে নিয়ে যান। এরপর বেলা গড়িয়ে দুপুর হলেই মেলার মাঠে ভিড় জমতে শুরু করে। আর তখন থেকেই দোকানের সামনে লাইন পড়তে শুরু করে। সন্ধ্যায় সেই লাইন দীর্ঘতর হয়। ভেটাগুড়ির জিলাপির দাম প্রতি কেজি ১২০ টাকা। এই দাম গত তিন বছর ধরে একই রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন।