কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ওই ডিভাইস উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। শীঘ্রই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের বাণিজ্যনগর শিলিগুড়িতে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় প্রতারণা চক্র। মাঝেমধ্যেই প্রতারকরা ব্যাঙ্কের অফিসার পরিচয় দিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের ফোন করছে। কথার জালে জড়িয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে এটিএম কার্ডের বিস্তারিত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। এরপর গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতারকরা টাকা গায়েব করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। মাঝেমধ্যেই এই ধরনের অভিযোগ পুলিসের সাইবার ক্রাইম সেলে দাখিল হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই চক্রের বিরুদ্ধে নড়েচড়ে বসেছে পুলিসের সাইবার ক্রাইম সেল। তারা কয়েকজন অভিযোগকারীর টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হওয়া আটকে দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। ওই চক্রের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে পুলিস। সম্ভবত এরজন্য ওই প্রতারণা চক্র কৌশল বদল করেছে বলেই পুলিস ও গোয়েন্দাদের সন্দেহ।
রবিবার শহরের বাঘাযতীন পার্কের রাস্তার ধার থেকে ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারের একটি ডিভাইস উদ্ধার হওয়ার পর পুলিস ও গোয়েন্দাদের সন্দেহ আরও গাঢ় হয়েছে। তাদের কাছে ওই ডিভাইস এখন মাথাব্যাথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে। পুলিস ও গোয়েন্দাদের একাংশ বলেন, ব্যাটারি ও তার জড়ানো ওই ডিভাইসে চিপ বা মেমোরি কার্ড লাগানো রয়েছে। সেটি সচল। ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারে কার্ড সোয়াইপ বা পাঞ্চ করার মুখে ওই ডিভাইস লাগানো হয়। এটিএম কার্ড পাঞ্চ করার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নম্বর, পিন নম্বর, কার্ডের নম্বর সহ যাবতীয় তথ্য ওই ডিভাইসে লোড হয়। এরপর সেটির মাধ্যমে প্রতারণা চক্র গ্রাকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অবাধে টাকা গায়েব করে দেয়। পুলিসের এক অফিসার বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ডিভাইসকে ‘স্কিমার’ বলছেন। সেটা স্কিমার কি না তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। সেটি যে জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার আশপাশে কয়েকটি ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার রয়েছে। ব্যাঙ্কগুলি সঙ্গে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের বর্ধমান, আসানসোল, দুর্গাপুর সহ বেশকয়েকটি জায়গায় এই ধরনের অপরাধ সংগঠনের নজির মিলেছে। কিন্তু শিলিগুড়িতে এই ধরনের ডিভাইস এই প্রথম উদ্ধার করা হল। পুলিসের এক অফিসার বলেন, ওই ডিভাইস কোনও ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারে ব্যবহার করা হয়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়। সেটি কীভাবে বাঘাযতীন পার্ক এলাকায় এসেছে, তাও জানা যায়নি। তদন্তে এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার তদন্ত কিছুটা সময়তো লাগবেই। তাই উদ্ধার হওয়া ডিভাইস নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব পুলিসের সাইবার ক্রাইম সেলকে দেওয়া হতে পারে।
ব্যস্ততম এই শহরে ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারগুলির উপর দুষ্কৃতীদের টার্গেট অনেকদিনের। পুজোর আগে শহর ও সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকায় বেশকিছু এটিএম কাউন্টরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। বেশকিছু কাউন্টার ভাঙচুরও করা হয়েছে। দুষ্কৃতীরা একটি এটিএম কাউন্টারের ভল্ট কেটে টাকা লুট করেছে বলে অভিযোগ। পুলিস এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলির কিনারা করতে সক্ষম হয়নি বলে অভিযোগ। তাছাড়া কাউন্টারগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থাও চাঙ্গা করা হয়নি। অধিকাংশ কাউন্টারই অরক্ষিত। এই সুযোগকেই ওই প্রতারণা চক্র কাজে লাগাতে চাইছে বলে অনেকেই মনে করছেন।