ওয়াশিংটন: কোভিডকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে আগেই বেজিংকে নিশানা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার চীনের ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকেই কটাক্ষ করে তোপ দাগলেন তিনি। ট্রাম্পের মুখে করোনার নতুন নামকরণ হল ‘কুং ফ্লু ভাইরাস’। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে নেট দুনিয়ায়। কিন্তু থোড়াই কেয়ার ট্রাম্পের। স্বভাবসিদ্ধভঙ্গিতে সমালোচকদের জবাবও দিয়েছেন তিনি । বলেছেন, ‘ওই মারণ ভাইরাসকে আমরা ১৯টি নামে ডাকতে পারি। তা নিয়ে সবার এত মাথাব্যথার কী রয়েছে!’ কোভিডের হানায় আমেরিকার এখন কাহিল দশা। সামলাতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা ট্রাম্প প্রশাসনের। আর যে হেতু কোভিড-১৯’র আঁতু‌ড় ঘর চীনের উহান, তাই প্রথম থেকেই চীনকে বিঁধে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই চীনের বিরুদ্ধ সুরও চড়াচ্ছেন তিনি। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, আন্তর্জাতিক মঞ্চে চীনকে একঘরে করতেই বারবার কোভিড ইস্যুকে সামনে আনছেন ট্রাম্প।
কারণ, ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে চার লক্ষ। সংক্রামিত ৮৯ হাজার ৪৪ লক্ষ ৪৬৩। ত্রাহি ত্রাহি রব উঠছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের। এই আবহেই ট্রাম্প ফের কোভিড মহামারীর দায় চাপালেন চীনের ঘাড়ে। গত বছর ডিসেম্বরে উহানে প্রথম থাবা বসায় করোনা। তারপর বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে এই মারণ ভাইরাস। এর আগেও বহু দেশ চীনের উপর দোষ চাপিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সরব আমেরিকা। এবং রাখঢাক না করেই সরাসরি চীনকে কাঠগড়ার তুলেছেন ট্রাম্প।
চীনের ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে কুং ফু। বিশেষ করে ক্যারাটে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে চীনের এই ‘মার্শাল আর্টে’র কদর বিশ্বব্যাপী। এদিন সেই কুং ফু’র সঙ্গে মিলিয়ে ট্রাম্প করোনার নতুন নাম দিলেন কুং ফ্লু। তাঁর কথায়, ‘করোনার আর এক নাম এখন কুং ফ্লু।’ সেই সঙ্গে সমালোচকদের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘আমি করোনাকে যে কোনও নাম দিয়ে ডাকতেই পারি। তাতে কোনও অসুবিধা নেই। অনেকেই তো ভাইরাস বলছে। আবার অনেকে বলছেন ফ্লু।’ আমেরিকায় এখন টেস্টিংয়ের হার কমাতে চান ট্রাম্প। তাঁর অভিমত, যে ভাবে দ্রুত টেস্টিং হচ্ছে তাতে ভুল পরিসংখ্যানের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। চীনেও ফের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। সে দেশে ২৫টি নতুন করে সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। তাঁরা সকলেই বেজিং এবং হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে ৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ব্রাজিল, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর সহ আরও কয়েকটি দেশে করোনা চিত্রের কোনও পরিবর্তন হয়নি। সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে এই দেশগুলিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় তেমন কোনও হেরফের হয়নি। ইউরোপের মধ্যে ১৪ সপ্তাহ পর লকডাউন তুলল স্পেন।