অতি সত্যকথনের জন্য শত্রু বৃদ্ধি। বিদেশে গবেষণা বা কাজকর্মের সুযোগ হতে পারে। সপরিবারে দূরভ্রমণের যোগ। ... বিশদ
তিনটি কৃষি আইন অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে গত প্রায় চারদিন ধরে দিল্লি সংলগ্ন একাধিক সীমানা এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভ করছেন কৃষকেরা। যার মধ্যে এই সিংঘু বর্ডার বিক্ষোভের কার্যত প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এগতে থাকলে বিনা বাধায় সিংঘু বর্ডারে পৌঁছনো যাবে, এমনটা মোটেও নয়। বর্তমান পরিস্থিতির জেরে মূল সীমানার অনেক আগেই বসানো হয়েছে একের পর এক অস্থায়ী চেক পোস্ট। কোথাও পরিচয়পত্র দেখালে এগতে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও শত অনুরোধেও কাজ হচ্ছে না। কিলোমিটার খানেক রাস্তা ঘুরে পৌঁছতে হচ্ছে মূল বিক্ষোভস্থলে। সেখানেও অস্থায়ী কাঁটাতারের বেড়া। পুলিসের সপ্রশ্ন দৃষ্টি। রবিবার সূরজমলের সঙ্গে দেখা হল ওই কাঁটাতার পেরিয়েই। মুখে অন্তত তিনদিনের না কাটা দাড়ি। চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। ঠান্ডায়। আবার বয়সের ভারেও। জানালেন, তাঁর বয়স ৮০ বছর। মাথায় কম্বল নিয়ে আপাতত সিংঘু বর্ডারই তাঁর আস্তানা। বললেন, ‘সামান্য জমি আছে। তাতে চাষ করে খাওয়া জোটে। যতদিন দাবি মানা না হচ্ছে, প্রতি রাতে এখানেই কম্বল বিছিয়ে শোব।’ অমৃতসরের পালবিন্দর সিংয়ের বয়সও ৭০ পেরিয়েছে। সাফ জানালেন, ‘আপাতত ছ’মাসের রেশন রয়েছে। প্রয়োজনে আরও কয়েক মাসের রসদ চলে আসবে। হাম ডরনেওয়ালে নেহি হ্যায়।’ দিল্লি শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটিও বিক্ষোভরতদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানায়। কর্মসূচির মাঝেই লাইন দিয়ে খাবার নিচ্ছেন চাষিরা। হাসছেন। হইচই করছেন। স্লোগান দিচ্ছেন। হাল্লা বোল রব তুলছেন। ‘বহিরাগত’কে শেষমেশ ‘মেহমান’ ঠাউড়ে খাবার অফারও করছেন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় কিষাণ সংগঠনের যশবীর সিং, লখবিন্দর সিংয়েরা স্পষ্ট বলছেন, ‘৪০০ কিলোমিটার হেঁটে এসেছি। বুরারিতে সমাবেশ করার জন্য নয়। বুরারি গ্রাউন্ড আদতে জেল। যন্তরমন্তরে বসতে দিয়ে কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিক কেন্দ্র। তাহলেই হবে।’
কৃষক বিক্ষোভে রাজনীতির রং লেগেছে আগেই। রবিবারও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর অভিযোগ করেছেন, করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলে দায়ী হবেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করবেন না। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অবিলম্বে কথা বলুক কেন্দ্রীয় সরকার। সর্বভারতীয় কৃষক সংগঠনগুলি ঘোষণা করেছে, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে রাজ্যে শুরু হবে প্রতিবাদ আন্দোলন। এর মধ্যেই সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক ধরে সার সার দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী ট্রাক চালকেরা অপেক্ষা করছেন পুনরায় ‘চাক্কা’ ঘোরার।