শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
তেজস্বীর বাবা লালুপ্রসাদের জমানায় মহম্মদ নাসেরের গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। কাঁচা রাস্তা। এখন ঘরে ঘরে বিজলি। রাস্তা পাকা। নীতীশের উন্নয়ন নিয়ে খুশি নাসের।
পেটের তাগিদে ঘর ছেড়েছেন ইন্দিবর প্রসাদ, ব্রজেশ রাইরা। রাজ্যে কর্মসংস্থান হলে ঘরে ফিরবেন তাঁরা। তেজস্বী হোক বা চিরাগ পাসোয়ান। প্রসাদরা চান, কুর্সিতে বসুন নতুন প্রজন্মের কোনও প্রতিনিধি।
শোয়েব, নাসের, ব্রজেশরা বিহারের বাসিন্দা। রুজি-রুটির টানে এখন গুজরাতের আমেদাবাদে থাকেন। সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। সংখ্যাটা নিতান্ত কম নয়। তথ্য বলছে, লক্ষেরও বেশি বিহারি শহরের বিভিন্ন মহল্লায় থাকেন। তাই আমেদাবাদকে ‘মিনি বিহার’ বলেও ডাকেন অনেকে। প্রতিবারই বিহারের ভোটে বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠেন এখানকার শ্রমিকরা। ইস্যুভিত্তিক তর্ক-বিবাদ চালান নিজেদের মধ্যে। সেখান থেকে ঠিক করে নেন পছন্দের রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে। তারপর হইহই করে দল বেঁধে তাঁরা বাড়ি যান। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আবার ফিরে আসেন। এবার তা হলেও ‘মিনি বিহার’-এর মন কোন দিকে? কর্মসংস্থানের ইস্যুতে এখানকার শ্রমিকদের একটা বড় অংশ মনে করেন, লকডাউনে পরিযায়ীদের দুর্দশা সামলাতে চূড়ান্ত ব্যর্থ নীতীশ কুমারের সরকার। বিহারে কাজ নেই। এবার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নতুন মুখ চাইছেন তাঁরা। আবার শ্রমিকদের একটা অংশের দাবি, বিহারকে খোলনলচে বদলে দিয়েছেন নীতীশ। এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। আমেদাবাদের একটি কাপড়ের কারখানায় কাজ করেন শোয়েব। বিহারের অজ গাঁ খানপুরের বাসিন্দা তিনি। শোয়েব মনেপ্রাণে চান, এবার বদল আসুক। কুর্সিতে বসুন আরজেডি’র তরুণ তুর্কি নেতা তেজস্বী। এমন সোজাসাপটা হিসেবের কারণ? তাঁর জবাব, ‘লকডাউনে ৪৫ জন সহকর্মীকে নিয়ে আমি রামোলে আটকে ছিলাম। দু’মাস হাতে কোনও টাকা ছিল না। সাহায্য চেয়ে অনেক নেতাকে ফোন করেছিলাম। হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তেজস্বী।’
মহম্মদ নাসের কিন্তু সমর্থন করছেন না শোয়েবকে। কাজের টানে নাসেরও আমেদাবাদে। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে নীতীশকেই দেখতে চাইছেন তিনি। কারণ? ‘আগে আমাদের গ্রামে কাঁচা রাস্তা ছিল। এখন সেখানকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ!’—উন্নয়নমন্ত্রেই বাজিমাত করবেন নীতীশ। তবে বিজেপির সঙ্গে নীতীশের জোট সমীকরণটা ঠিক মানতে পারছেন না নাসের মতো অনেকেই। সেক্ষেত্রে তাঁদের আত্মতুষ্টি, বিহার ভোটে ব্যক্তিগত ক্যারিশমা বেশ প্রভাব ফেলে। লালুপ্রসাদ তার অন্যতম দৃষ্টান্ত। নীতীশও সেই পথের পথিক।
তাহলে তো সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনাও ভোট-ভাগ্য ঠিক করতে সহায়ক হবে? নাসের-শোয়েবের জবাব, তাই যদি হতো তাহলে প্রাক্তন ডিজিপি গুপ্তেশ্বর পাণ্ডেকে টিকিট দিত জেডিইউ। সুশান্ত ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে ভোটে জেতার আশায় চাকরি ছেড়েছিলেন পাণ্ডে। যোগ দিয়েছিলেন জেডিইউতে। কিন্তু তিনি টিকিটই পাননি। ‘মিনি বিহার’-এর শ্রমিক ইন্দিবর প্রসাদ, ব্রজেশ রাইয়ের মতো তরুণরা অবশ্য শোয়েবের দলে। তাঁদের দাবি, বিহারে এবার ‘প্রতি হাতে কাজ চাই’। তার জন্য কুর্সিতে বসুন তেজস্বী অথবা চিরাগ।