নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ১১ জানুয়ারি: নরেন্দ্র মোদির বিরোধীদের সব থেকে অস্বস্তিকর যে প্রশ্নটির সম্মুখীন হতে হয়, সেটি হল দেশে আর কোন নেতানেত্রী আছেন যিনি তাঁর মতো জনপ্রিয়? লোকসভা ভোটে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বারংবার বিজেপি প্রচারে প্রশ্ন করেছে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি, বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী হে হবেন? প্রত্যাশিতভাবেই বিরোধীদের কাছে উত্তর ছিল না। কারণ, মোদি বিরোধী সামগ্রিক জোটও হয়নি এবং হলেও মোদির চ্যালেঞ্জার হিসেবে একটি নাম কখনও উঠে আসেনি। আর এই সুযোগটিই বিজেপি লাগাতার নিয়েছে। এবার দিল্লির আসন্ন বিধানসভা ভোটে ঠিক বিজেপির অস্ত্রেই বিজেপিকে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আম আদমি পার্টি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত দিল্লি বিজেপিকে আম আদমি পার্টি প্রশ্ন করছে, আপনাদের কাছে কি মুখ্যমন্ত্রী মুখ আছে? একটি বিখ্যাত টুথপেস্টের ব্র্যান্ড ক্যাম্পেনের স্লোগান ধার করা হয়েছে, ‘কেয়া আপকে পাস মুখ্যমন্ত্রী ফেস হ্যায়’? অরবিন্দ কেজরিওয়াল আম আদমি পার্টির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। কিন্তু বিজেপি কোনও নেতাত্রেীকেই এবার মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে প্রোজেক্ট করছে না। ২০১৫ সালে রাজনীতির আঙিনার বাইরে থেকে কিরণ বেদিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরেছিল বিজেপি। কিন্তু ভোটে শোচনীয় বিপর্যয় হয়েছিল ভোটে। দিল্লি বিজেপির অন্দরে একঝাঁক নেতা মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। তাই বিজেপি শীর্ষ নেতারা সাহস পাচ্ছেন না কোনও বিশেষ একজনকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে। এই সমস্যার কথা সম্যক অনুভব করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল আরও বেশি করে এই ইস্যুতেই ঩বিজেপিকে কোণঠাসা করতে উদ্যত হয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্ক প্রসূত এই ক্যাম্পেন। অর্থাৎ কেয়া আপকে পাস মুখ্যমন্ত্রী ফেস হ্যায়? বিজেপির চিন্তা বাড়িয়েছে একের পর এক জনমত সমীক্ষা। প্রতিটি সমীক্ষায় দেখিয়েছে, আবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালই দিল্লিতে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। ২০১৫ সালে ৭০টি আসনের মধ্যে মাত্র তিনটি আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বিজেপিকে। এবার সেই আসন বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সিংহভাগ সমীক্ষার বক্তব্য, সেই আসন ১০ পেরবে না। কেজরিওয়াল এবার ৫৫ থেকে ৫০ আসন পেতে পারেন। অর্থাৎ এবারও যদি দিল্লিতে বিজেপি পরাজিত হয় তা হলে লাগাতার ৬টি রাজ্যে পরাজয়ের স্বাদ পেতে হবে। তাই দিল্লি বিজয় বিজেপির পক্ষে অত্যন্ত দরকার। অন্যদিকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের লক্ষ্য হ্যাটট্রিক করা। অর্থাৎ টানা তিনবার দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী হওয়া।