কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
পদযাত্রা, ধর্না, পথসভা—রাজনৈতিক কর্মসূচির এই চেনা ছকের বাইরে গিয়ে শিল্পীদের প্রতিবাদের আগেও সাক্ষী থেকেছে মহানগর। ২০০২ সালে গুজরাতের দাঙ্গার পর রাজ্যের প্রথম সারির শিল্পীরা ধর্মতলায় ছবি এঁকে ছিলেন। পরে সেই ছবি অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে প্রদর্শনী ও নিলাম হয়েছিল। যার উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই নিলামের অর্থ দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণে পাঠানো হয়েছিল। সেটা অবশ্য ছিল শিল্পীদের সংগঠিত উদ্যোগ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজেও পেশাদার শিল্পীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তুলি-রং নিয়ে ছবি আঁকতে রাস্তায় নামছেন, এমন ঘটনার নজির নেই। গুজরাত দাঙ্গার সময় সেই প্রতিবাদে শামিল হওয়া শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য এবারেও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগের পুরোভাগে। ধর্মের নামে নাগরিকত্ব, সমাজকে বিভাজিত করবে। এই দুর্দিনের বার্তাই যেন শিল্পীদের ক্যানভাসে ফুটে উঠবে। তাই সাদা ক্যানভাসের বদলে থাকবে চল্লিশটি কালো ক্যানভাস। জানালেন শুভাপ্রসন্ন। তিনি বলেন, দুপুর ১টা থেকে ছবি আঁকা শুরু হবে। উল্লেখ্য, এই নাগরিক আন্দোলনের পর্বে গত মাসে পার্ক সার্কাস ময়দানে একটি জনসভা হয়। সেখানে বিশিষ্ট শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতি জগতের প্রতিনিধিদের সভায় হাজির হয়েছিলেন মমতা। সেখানেও একটি বড় ক্যানভাসে শুভাপ্রসন্ন সহ একাধিক শিল্পীর সঙ্গে ছবি এঁকেছিলেন মমতা। জনসভা চলার ফাঁকে সুযোগ পেলেই তুলি ধরেছিলেন তিনি। শুভাপ্রসন্ন বলেন, এবার আড়াই ফুট বাই আড়াই ফুটের আলাদা আলাদা ক্যানভাস থাকবে। শিল্পীরা নিজেদের মতো করে সেখানে তাঁদের প্রতিবাদের ভাষা ফুটিয়ে তুলবেন। পরবর্তীতে এইসব ছবির প্রদর্শনী করার বিষয়েও ভাবনা চিন্তা রয়েছে।
এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে তাঁর আপত্তির কথা মুখ্যমন্ত্রী শুধু রাজপথেই নয়, বিধানসভাতেও তা নথিভুক্ত করতে চলেছেন। ঘটনাচক্রে বিধানসভায় এই বিষয়ে সর্বদলীয় প্রস্তাব পাশ করানোর পরের দিনই প্রকাশ্যে তুলি হাতে অবতীর্ণ হবেন তৃণমূল নেত্রী। দেশজুড়েই সিএএ তুলে নেওয়ার দাবিতে দলীয় পরিসরের বাইরে বিভিন্ন পেশার মানুষ যোগ দিচ্ছেন। সেই সব সমাবেশের অভিনবত্ব, স্লোগান, পোস্টার নির্মাণ, গান তৈরি, পথনাটিকা ইত্যাদি নজর কাড়ছে। বিশেষত পড়ুয়াদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নাগরিক সমাজেও আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। দেশের চলমান প্রতিবাদী সংস্কৃতিতে মমতার এই রং-তুলি-ক্যানভাস নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা জুড়বে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।