উচ্চবিদ্যায় ভালো ফল হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে সুযোগ আসবে। কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
প্রায় তিন বছর হতে চলল, বিভিন্ন কলেজে ছাত্র নির্বাচন হয়নি। ছাত্র সংগঠনগুলির চাপে চারটি একক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল শিক্ষাদপ্তর। যার মধ্যে প্রেসিডেন্সি এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তা সম্পন্ন হয়েছে। যাদবপুরে তা হবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি। কয়েক মাস আগে পর্যন্তও শিক্ষামন্ত্রী জোর গলায় একাধিক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই বিভিন্ন কলেজে ছাত্রভোটের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। কিন্তু এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে যেভাবে আন্দোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তৃণমূল সরকার, তাতে এখনই এই ভোট করানো হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। জাতীয় ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিজেপি’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূলের প্রায় সব হেভিওয়েট নেতামন্ত্রীরাই। শিক্ষামন্ত্রীকেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ধর্নামঞ্চে গিয়ে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের কী অবস্থান, তা স্পষ্ট হচ্ছে না।
এর আগেরবার যখন ভোট স্থগিত করে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়, তখন একটি কারণ হিসেবে বলা হয়, ফেব্রুয়ারি-মার্চে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক সহ অন্যান্য বোর্ডের পরীক্ষা থাকে। সেই সময় এই ভোট করানোর কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না। এবারও সেই একই পরিস্থিতি। আগামী দু’মাস পরীক্ষার মরশুম। তারপর এপ্রিলে পুরভোট হতে পারে। তারপর বাকি পুরসভাগুলির ভোট হবে। সমস্ত প্রক্রিয়া মিটতে মিটতে মে মাস হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থায় কবে ছাত্র নির্বাচন করতে চাইবে সরকার, তা স্পষ্ট নয়। এদিকে, পুর ভোট মিটতে না মিটতেই আগামী বছরের বিধানসভার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যাবে বিভিন্ন দলের মধ্যে।
এদিকে ছাত্র ভোট না হওয়ায় কলেজগুলির ছাত্র সংসদের পুরনো সদস্যরাই কাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু বেশ কিছু কলেজে সেই সব পড়ুয়া পাশ করে গিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কোথাও তাঁরাই থেকে গিয়ে সংসদ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন, তো কোথাও নতুনরা দখল নেওয়ার চেষ্টা করলে, গোলমাল বেধে যাচ্ছে। অধ্যক্ষদের আশঙ্কা, দ্রুত ভোট না হলে, বহু কলেজেই এমনটা হতে পারে। ছাত্রভোট নিয়ে আদৌ সরকারের সদিচ্ছা আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, বিজেপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনের অভিমুখ তাদের দিকেও ঘুরে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় ছাত্র সংসদ নির্বাচন করাতে চাইছে না তারা। অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি মণিশংকর মণ্ডলের পাল্টা হুঙ্কার, টিএমসিপি ভোটে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। প্রত্যেক জেলায় তাদের সংগঠন তৈরি হয়ে আছে। ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি সোমদীপ ঘোষের প্রশ্ন, ভোট করানো নিয়ে সরকারের আদৌ সদিচ্ছা আছে তো? ঠিকভাবে ভোট হলে বহু কলেজেই টিএমসিপি হেরে যেতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই নানা অজুহাতে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোট। এবিভিপি’র রাজ্য সহ সভাপতি সুবীর হালদারও সরকারের এই মনোভাবের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, হেরে যাওয়ার ভয়ে সরকার ভোট করাতে চাইছে না।