সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বরে থাকলেও গত লোকসভা ভোট থেকে এই প্রকল্পে কাটমানির অভিযোগ ওঠে। তাতে নড়েচড়ে বসে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর। কড়াকড়িও করা হয়। আবার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক এমন সব কড়াকড়ি করেছে যে, গ্রামের লোক এই প্রকল্পে কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাই গত বছরের তুলনায় এ বছরে এই সময়ে কাজের পরিমাণ ও শ্রমদিবস তৈরির সংখ্যা অনেক কম। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ২৮ কোটি শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা পূরণ করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন অফিসাররা।
কাজে গতি আনতে এবং কী ধরনের কাজ করা যাবে, তার জন্য ‘একশো দিনের কাজের একশো কথা’ নামের একটি গাইডলাইন তৈরি করে সব জেলার জেলাশাসক, জেলা প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর, জিটিএ’র প্রধান সচিব, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অতিরিক্ত এগজিকিউটিভ অফিসারকে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সব গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও প্রোগ্রাম অফিসারদের ওই গাইডলাইন পৌঁছে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে প্রথমেই বলা হয়েছে, এই প্রকল্পের কাজ দয়া কিংবা করুণা নয়, মানুষের অধিকার। গ্রামের যে সব পরিবারে আঠারো বছর বা তার বেশি বয়সের মানুষ আছেন, সেই সব পরিবার জবকার্ড পাওয়ার যোগ্য। জবকার্ড চেয়ে কেউ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে লিখিত আবেদন করলে তদন্ত সাপেক্ষে ১৫ দিনের মধ্যে তাঁকে জবকার্ড দিতে হবে।
নির্দেশে বলা হয়েছে, একটি পরিবারে একটি মাত্র জব কার্ড থাকবে। পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী বছরে মোট ১০০ দিনের কাজ দিতে গ্রাম পঞ্চায়েত দায়বদ্ধ। কাজ পেতে হলে কাজ চাইতে হবে। নির্দিষ্ট ফর্মে বা সাদা কাগজে আবেদন করতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে যদি কাজ দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে নির্দিষ্ট হারে বেকারভাতা দিতে হবে গ্রাম পঞ্চায়েতকে। যদি কোনও পঞ্চায়েত তা না মানে, তাহলে তাকে পঞ্চায়েত আইনে দোষী করা হবে। গাইডলাইনের ১৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, আমার পছন্দের লোককে কাজ দেব, অন্যদের কাজ দেব না—এমনটা করা যাবে না। হাতে কিছু জবকার্ড রেখে সেই জবকার্ড অনুযায়ী কাজ দেওয়া হবে, এমনটা করা যাবে না। এসব আইন বিরুদ্ধ। জবকার্ড পরিবারের কাছেই থাকবে। সুপারভাইজার, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী বা অন্য কোনও তৃতীয় ব্যক্তির কাছে জবকার্ড রাখা চলবে না। এই কাজ আইনবিরুদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য।
এই জবকার্ড নিয়েই বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। তাই সতর্ক পঞ্চায়েত দপ্তর। কড়া নির্দেশিকা পাঠিয়ে মাস্টার রোলের মেয়াদ নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। ন্যূনতম ছ’দিনে একেকটি মাস্টার রোল ক্লোজ করা হবে। বড় কাজের ক্ষেত্রে তা ১৫ দিন পর্যন্ত খোলা থাকবে। গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে মেয়াদ হবে ৩০ দিন। পশ্চিমাঞ্চলের চারটি জেলায় মাস্টার রোল বন্ধ হবে ৩৫ দিনে। ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠাতে হবে। টাকা দেওয়া নিয়ে যেন কোনও অভিযোগ না ওঠে।