সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
বর্ধমানের জামালপুর এলাকার বনবিবিতলা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষক রাজীব সাহা লক্ষ করেন, যে উদ্দেশ্যে সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্প অনুযায়ী প্যারাটিচারদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাঁর আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আদালতকে জানান, সরকরি গাইডলাইন অনুযায়ী, এই শিক্ষকরা মূলত প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবেন। পিছিয়ে থাকা গ্রামীণ এলাকার শিক্ষার্থীরা যাতে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে, সেদিকে এঁরা নজর রাখবেন, প্রশিক্ষণ দেবেন। দরকার মতো পড়াশোনায় দুর্বল শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। অথচ, এঁদের প্রায় সর্বত্রই সহকারী শিক্ষকদের মতো কাজ করানো হয়। এমনকী নবম দশম, বা একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাসও এঁদের নিতে হয়।
মামলাকারী জানিয়েছেন, পঞ্চম বা তার পরের শ্রেণীগুলিতে পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা গাইডলাইন অনুযায়ী প্যারাটিচারদের সাহায্য থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে বলেই উঁচু ক্লাসে গিয়ে সেই পড়ুয়ারা পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। পড়াশোনার সার্বিক মান ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েই চলেছে। বিষয়টি নিয়ে নানা জায়গায় চিঠি দিয়ে জানিয়েও তিনি সুরাহা করতে ব্যর্থ হন। সেই সূত্রে তিনি জনস্বার্থ মামলায় দাবি করেন, প্যরাটিচারদের সরকারি গাইডলাইনের বাইরে যেন কাজ না করানো হয়। যে দাবিকে স্বীকৃতি দিয়ে বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে, বিক্ষুব্ধ প্যারাটিচাররা সমকাজে সমবেতন, মাতৃত্বকালীন এবং চাইল্ড কেয়ার লিভ ইত্যাদির দাবিতে যে আন্দোলন করে চলেছেন, তা এদিন নয়া মোড় নিল। আদালতে পুজোর ছুটির আগে তাঁরা বিকাশ ভবনের অদূরে ধর্না আন্দোলন করার অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কারণ, পুলিস প্রয়োজনীয় অনুমতি দিচ্ছিল না। আদালত তাঁদের আবেদন পুলিসকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে বলে। তাঁদের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য ও শামিম আহমেদ আদালতকে জানান, পুলিস এমনই শর্ত দেয় যে, আন্দোলন করা যায়নি। তাই ১১ নভেম্বর থেকে তাঁরা টানা আন্দোলন করতে চান। কিন্তু, পুলিস ই-মেল করে জানিয়েছে, জায়গাটি ১৪৪ ধারা ঘোষিত এলাকার মধ্যে পড়ে। তাই সেখানে আন্দোলন করা যাবে না। এই অবস্থায় আদালত ৫ নভেম্বর বলেছিল, আন্দোলনকারীরা পুলিসের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করবেন। সেই বৈঠক সূত্রে তাঁরা এদিন আদালতকে জানান, ধর্নায় ৫০০ থেকে ৬০০ জনের বেশি থাকতে পারবেন না। বেলা ১২টা থেকে তিনটের মধ্যে আন্দোলন শেষ করতে হবে। আর ১১ নভেম্বর আন্দোলন করাই যাবে না। কারণ সেদিন এখানে রাষ্ট্রপতি আসছেন।
এই পরিস্থিতিতে আদালত আন্দোলনকারীদের পক্ষে নির্দেশ দিলে সরকারপক্ষ এদিনই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে তা চ্যালেঞ্জ করার অভিপ্রায় জানায়। বেঞ্চ জানায়, লিখিত আবেদন করা হলে বিবেচনা করা হবে। এদিকে শনি ও রবিবার আদালত বন্ধ। অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টির ফয়সালা করতে রবিবার দুই বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ বসতে পারে।