নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ১০ টাকায় যতখুশি খাও। এর সঙ্গে উপরি, বাচ্চা ও বয়স্কদের লাগবে না কোনও টাকা। না, বড় কোনও দোকানের বিজ্ঞাপন নয়। বরং ক্রেতা টানতে ঘুগনি বিক্রেতা এক হকারের ‘মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি’। দীর্ঘদিন ধরে এই কৌশলেই পিজি হাসপাতালের সামনে অগুনতি লোকজনকে ঘুগনি খাইয়ে মাতিয়ে রেখেছেন সোনারপুরের বাসিন্দা মহাদেব মণ্ডল। রোজকার অভ্যাস মতো ভোর থেকে হাসপাতালের সামনে হাঁড়ি নিয়ে ঘুগনি বিক্রি করেন তিনি। লোকে তাঁকে ‘ঘুগনিকাকু’ বলে সম্বোধন করে। সোনারপুরের কামরাবাদের বাসিন্দা মহাদেববাবু ভোর রাত থেকেই ঘুগনি তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দেন। জানালেন, রাত দুটো নাগাদ ঘুগনি রান্না শুরু করেন। তারপর ভোর ৪টেয় সব গুছিয়ে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন এস এস কে এম হাসপাতালের উদ্দেশে। পাঁচটা থেকে শুরু হয় ঘুগনি বিক্রি। হাসপাতালের ফুটপাতের এক ধারে সাইকেলের উপর হাঁড়ি নিয়ে চলে কেনাবেচা। ঘুগনি খাওয়ায় কোনও বাধা নেই। একবার টাকা দিয়ে যতক্ষণ খুশি খেতে পারবেন সাধারণ মানুষ। মহাদেববাবুর কথায়, লোকজনকে খাওয়াতে ভালোবাসি। তাই এই আয়োজন করে রোজ এখানে আসা। ১০ টাকা দিয়ে একবার নয়, যতবার চাইবেন, ততবার দেওয়া হবে। হাসপাতালের সামনে গিয়ে দেখা গেল, মহাদেববাবুর ঘুগনি খেতে ভালোই ভিড় জমেছে। কেউ তিন বাটি নিলেন। কেউ আবার দুই বাটি খেয়ে একটু বাড়ির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। সেরকমই একজন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ‘ঘুগনি কাকু’র থেকে ঘুগনি খাচ্ছি। এরকম জিনিস সত্যি আর কোথাও পাওয়া যাবে না। বহু রোগীর পরিজনকে সেখানেই সস্তায় প্রাতরাশ সারতে দেখা গেল।
‘ঘুগনি কাকু’র বিশেষত্ব, কারও সঙ্গে বাচ্চা বা বয়স্ক কেউ এলে, তাঁদের হাসি মুখে, বিনামূল্যে ঘুগনি খাওয়ান তিনি। তবে আক্ষেপও রয়েছে। মহাদেববাবু বলেন, ১০টা বাজলেই হাসপাতালের বাইরে ওই ফুটপাতে আর থাকতে দেয় না পুলিস। ফলে বাধ্য হয়েই সরে যেতে হয়। এই চত্বরে একটি স্থায়ী বসার জায়গা করে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।