নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তিনজনের। আহত হন আরও দু’জন। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে নিউটাউন থানা এলাকার এমএআর রোডে। পাঁচ বন্ধু সল্টলেকে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ি চালিয়ে ইকো পার্কের দিকে যাচ্ছিলেন। ১ নম্বর গেটের আগে একটি বেসরকারি হোটেলের কাছে ইউ টার্ন করতে গিয়ে মেট্রোর পিলারে ধাক্কা মেরে গাড়িটি উল্টে যায়। গাড়ির গতি এত বেশি ছিল যে, ওই অবস্থায় গাড়িটি ঘষটে অনেকটা চলে যায়। পুলিস গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। দুর্ঘটনায় মৃতরা হলেন, নিশীথ জয়সওয়াল (১৭), কুশল ঝাওয়ার (১৮) ও মায়াঙ্ক ঝাওয়ার (১৮)। গাড়িটি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে চালক মোহিত জৈনকে বের করতে হয়। মোহিত জৈন ও সর্বজিৎ সিংকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বাকি তিনজনকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে জানান।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িতে থাকা পাঁচ বন্ধুর বয়স ১৬ থেকে ২১-এর মধ্যে। মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য দেহগুলি আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে পুরো বিষয়টি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট হবে। ফরেন্সিকের প্রাথমিক রিপোর্টে গাড়ির গতি অনেক বেশি ছিল।
সল্টলেকের এএইচ ব্লকে মোহিতের বাড়িতে সোমবার রাতে আড্ডা বসে বন্ধুদের। দুর্ঘটনার সময় গাড়ির সামনের দিকে চালকের পাশে বসেছিলেন সর্বজিৎ। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পর এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়াতে গাড়ির সামনে দিকে থাকা দু’জন কম আঘাত পেয়েছেন। পুলিস জানিয়েছে, মায়াঙ্ক সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বিকম অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র। কুশল, নিশীথ দশম শ্রেণীর ছাত্র। সর্বজিৎ দশম শ্রেণী উত্তীর্ণ। কুশল ও মায়াঙ্ক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।
এদিন দুপুরে বিধাননগর উত্তর থানা চত্বরে কুশল ও মায়াঙ্কের আত্মীয় গোপাল মুন্দ্রা জানান, ওদের বাবা-মাকে এখনও পর্যন্ত ওদের মৃত্যু সংবাদ শোনানো হয়নি। সিএফ ব্লকে সর্বজিতের বাড়িতে গেলে তাঁর দাদা হরজ্যোৎ সিং বলেন, আমরা ভাইকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে চলে এসেছি। গত রাতে সাড়ে ১০টা নাগাদ ভাই বাড়ি থেকে বের হয়ে মোহিতের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে সকালে বের হয় এটুকুই জানি। এএইচ ব্লকে মোহিতের বাড়িতে গেলে তাঁর মা সুনীতা জৈন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এদিকে, এদিনই ইকো পার্কে ৪ নম্বর গেটের কাছে একটি আইসক্রিমের ট্রলির সঙ্গে একটি চারচাকার গাড়ির ধাক্কায় ট্রলির চালক জখম হন।