সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
ভাঙড় ১ নং ব্লকের বোতরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নাওড়া গ্রামে জন্ম হয়েছিল রামকৃষ্ণ দেবের শিষ্য ও বিবেকানন্দের গুরুভাই স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দের। তাঁরই জন্মভিটেতে গড়ে উঠেছে মিশনের আশ্রম। দীর্ঘ সময় ধরে ওই এলাকায় নানা সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে মিশন। তার পাশেই জেলা পরিষদের তিন থেকে চার বিঘার জলাশয় রয়েছে। ওই জায়গার সৌন্দর্যায়ন ও তার চারপাশ ঘিরে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তা রামকৃষ্ণ মিশনকে দেওয়ার ব্যাপারে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে অনুরোধ করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে আলোচনার পর মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের মাধ্যমে সেই জলাশয় তুলে দেওয়া হয় নাওড়া মিশনকে। সরকারিভাবে হস্তান্তর হলেও জলাশয় দখল করে যাঁরা মাছ চাষ করছিলেন, তাঁদের একটি অংশ তা ছাড়তে চায়নি। ফলে এ নিয়ে মতবিরোধ চলছিল। অভিযোগ, কয়েকমাস আগে শাসকদলের একটি অংশের মদতে দখলদাররা নাওড়া গ্রামের লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করায়, তাতে লেখা ছিল, জলাশয়টি মিশনকে দেওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। সেই চিঠি প্রশাসনকে দেওয়া হয়। তা জানাজানি হলে গ্রামের মানুষের মধ্যে এনিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়। তাঁরাও গণস্বাক্ষর করে প্রশাসনেকে পাল্টা চিঠি দেন। তাতে বলা হয়েছে, চাষের জমিতে জল দেওয়ার কথা বলে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাতে মিশনের জলাশয় নিয়ে কোনও প্রসঙ্গ ছিল না। শুধু তাই নয়, মিশনকে জলাশয় দেওয়া নিয়ে নাওড়া গ্রামের মানুষের কোনও আপত্তি নেই। এ নিয়ে মিথ্যা প্রচার হচ্ছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাঁরা প্রতিবাদ করায়, দখলদারদের অনুগামীরা বুধবার রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসিয়েছে। মহিলাদের অসম্মান করেছে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নাওড়া গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ দেখান, রাস্তা অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ভাঙড় থানার পুলিস যায়। ভাঙড় ১নং ব্লকের সভাপতি শাজাহান মোল্লাও ঘটনাস্থলে যান। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এদিন জেলাশাসক বলেন, পুরো বিষয়টি নজরে এসেছে। সরকারিভাবে জলাশয় হস্তান্তরের নথিপত্র দেখে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে মহকুমা শাসককে। ভাঙড় ১নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাজাহান মোল্লার দাবি, মিশনের জলাশয় নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে যা হয়েছে, সে ব্যাপারে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আসলে নাওড়ায় রাজনৈতিক সমস্যা রয়েছে। যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে। মিশনের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। তবে ঘটনাটি সঠিক কি না, সেব্যাপারে ভাঙড় ১ নং ব্লকের বিডিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। নাওড়া রামকৃষ্ণ মঠের একটি সূত্রে বলা হয়েছে, জলাশয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ, অনেকদিন আগেই সরকারিভাবে জলাশয়টি মিশনকে দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েকজন তাদের দখলদারি ছাড়তে চাইছে না। বরং মিথ্যা প্রচার করে বিভ্রান্ত করছে মানুষকে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনা হবে।