কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। হঠাৎ প্রেমে পড়তে পারেন। কর্মে উন্নতির যোগ। মাঝেমধ্যে ... বিশদ
উল্লেখ্য, মালদহের ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্তত আটটি কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটাররাই নির্ণায়ক শক্তি বলে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ওই আটটি কেন্দ্রের মধ্যে সাতটিতেই জিতেছিল কংগ্রেস। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিল সিপিএম। মালদহ থেকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল তৃণমূলকে। কিন্তু পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালের ফলাফল প্রায় উল্টো করতে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ২০১৬ সালে মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে লড়াই করে কংগ্রেসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দাবি, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় সকলেই তৃণমূলের পক্ষে দাঁড়াবেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী সহ যে প্রায় ৭০টি জনহিতকর প্রকল্প চালু করেছেন, তাঁর সুবিধা পেয়েছেন সব সম্প্রদায়ের নাগরিকরা। উন্নয়নের নিরিখে তাই এবার মানুষ বুঝতে পেরেছেন রাজ্য সরকার কতটা জনমুখী। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত নাগরিকরাও তাই এবার তৃণমূলমুখী।
একইসঙ্গে মালদহ তৃণমূলের মাইনরিটি সেল নেতৃত্বের বক্তব্য, বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দলের ক্ষমতা দখল আটকাতে পারেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আস্থা সংখ্যালঘু মানুষদের নিশ্চিন্ত করেছে। কংগ্রেস বা সিপিএমের পক্ষে জোট বেঁধেও বিজেপিকে আটকানো সম্ভব নয়। এই প্রচার করা হচ্ছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। ফলে সংখ্যালঘু ভোটারদের সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মাইনরিটি সেলের জেলা চেয়ারম্যান বলেন, মালদহের সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু উভয় সম্প্রদায়ের উপরেই গনিখান চৌধুরির প্রভাব অনস্বীকার্য। কিন্তু বরকত গনিখান যে সিপিএমকে বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার শপথ নিয়েছিলেন, সেই সিপিএমের সঙ্গে জোট করেই ভোটে লড়ছে কংগ্রেস। এই সিদ্ধান্ত আসলে গনিখানের প্রতি অসম্মান। আমরা সেকথাই মনে করিয়ে দিচ্ছি কংগ্রেস সমর্থক সংখ্যালঘু ভোটারদের। তাতে ফলও মিলছে। মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম নুরের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের দুয়ারে উন্নয়ন ও সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। একথা ঠিকই দীর্ঘদিন মালদহের সংখ্যালঘু ভোটাররা কংগ্রেসকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, অন্যদিকে বিজেপির মতো অগণতান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঠেকানোর ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপসহীন লড়াই এবার সংখ্যালঘু মানুষদের মনে আস্থা তৈরি করেছে। জেলার অধিকাংশ আসনে তৃণমূলের সাফল্য এবার নিশ্চিত।
তবে সংখ্যালঘু সমর্থন ধরে রাখার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, শেষ পর্যন্ত এবারও নিরাশ হতে হবে তৃণমূলকে। তৃণমূলের দাবিকে কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, মালদহের মাটি অসাম্প্রদায়িক মাটি। তাই বরকত সাহেব ও কংগ্রেসের সঙ্গেই যে সব সম্প্রদায়ের নাগরিক রয়েছে তা প্রমাণ হয়ে যাবে। একই দাবি কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায়েরও। তিনি বলেন, সম্প্রতি কংগ্রেসের মিটিং মিছিলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকরা যেভাবে অংশ নিয়েছেন তাতেই পরিষ্কার যে তৃণমূলের দাবির কোনও সারবত্তা নেই।