কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
বৃহস্পতিবার কর্ণাজোড়ায় জেলাশাসকের দপ্তরে গিয়ে দেখা যায় পিপি সেলে নিজের চেয়ারে বসে আছেন অর্পিতাদেবী। ভোটের ডিউটিতে অনুপস্থিত থাকার কারণে যেসমস্ত ভোটকর্মীকে শোকজ করা হয়েছে তাঁরা ওনার টেবিলে এসে শোকজের চিঠির জবাব জমা করছেন। অর্পিতাদেবী বলেন, আমার এখনও নির্বাচনের ডিউটি পড়েনি একথা ঠিক। তবে পিপি সেলে কাজ করতে হচ্ছে। ভোটের ডিউটি না পড়লেও সারাদিন ভোটের কাজই করতে হচ্ছে। ফলে মনে করতে না চাইলেও সারাদিন ওই ভোটের কথাই মাথায় ঘুরছে।
অর্পিতাদেবী তার ১০ বছরের মেয়ে সৃজা এবং চার বছরের ছেলে পৃথ্বীশকে তাঁর মা দীপালি বর্মনের কাছে রেখে অফিসে আসেন। ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তাঁকে শক্ত থাকতে হচ্ছে। কিন্তু রাজকুমার রায়ের মৃত্যুর পর থেকে চোখেমুখে যে উদ্বেগ ফুটে উঠেছিল তা এখনও রয়েছে। তিনি বলেন, ছেলে মেয়েরা বার বার জিজ্ঞাসা করছে, মা তোমার কি ভোটের ডিউটি পড়বে? তুমি কিন্তু ভোটের ডিউটি করতে যাবে না।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে করণদিঘি রহতপুর হাইমাদ্রাসার শিক্ষক রাজকুমার রায় ভোটের ডিউটি করতে ইটাহারে গিয়েছিলেন। গতবছরের ১৩ মে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। ১৪ তারিখ ভোট ছিল। ওই রাত থেকেই তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি অর্পিতাদেবী। ১৫ মে রায়গঞ্জে রেল লাইনের ওপর থেকে রাজকুমারবাবুর ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেসময়ে রায়গঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গা উত্তাল হয়ে উঠেছিল। সিআইডি তদন্তভার গ্রহণ করে। মৃতের মা সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা আর এগয়নি।
যে ভোটগ্রহণ করতে গিয়ে অর্পিতাদেবীর স্বামী আর ফিরে আসেননি সেই ভোটের কর্মযজ্ঞের মধ্যে বসেই তাঁকে এখন কাজ করতে হচ্ছে। ফলে সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি তাঁর মাথায় সব সময়েই ঘুরে ঘুরে আসছে। অর্পিতাদেবী বলেন, ভোটের কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হলেও এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে আর্থিক সহায়তা পাইনি। চাকরি ও সরকারি পাঁচলক্ষ টাকা ছাড়া কিছু মেলেনি। বাড়ির ঋণ নিয়েও চিন্তায় থাকি। তদন্তের রিপোর্ট এখনও বের হয়নি। আমি চাই স্বামীর মৃত্যুর সমস্ত ঘটনা সামনে আসুক।