সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
আড়াই বছর বয়স থেকেই দুরারোগ্য মাসকুলার ডায়স্টোফিতে আক্রান্ত শ্রীধর। শরীরে ডায়াট্রোফিন নামক এক প্রোটিনের অভাবে এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। জিনঘটিত এই সমস্যায় পেশির নড়াচড়া খুবই সীমিত হয়ে যায়। এই জটিল সমস্যা সত্ত্বেও কোনও বিশেষ সুবিধা নিতে চাইত না সে। মমতাদেবী বলেন, ‘পেশি সমস্যা থাকায় ও স্বাভাবিকভাবে ঘোরাফেরা করতে পারত না। হুইলচেয়ার ছাড়া নড়াচড়া করতে সমস্যা হতো। কিন্তু ওর আত্মবিশ্বাস, উদ্যম দেখলে কে বলবে, শরীরে এত সমস্যা!’
মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখত শ্রীধর। জীবনের আদর্শ করেছিল বিশিষ্ট বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংকে। ঘটনাচক্রে তিনিও প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে গবেষণায় নিজেকে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে তাঁর অবদান বিজ্ঞান জগতের সম্পদ। হকিংয়ের জীবনযুদ্ধের লড়াই হয়তো অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল ছোট্ট ছেলেটির মনে। দশম শ্রেণীর পরীক্ষা দেওয়ার আগে শ্রীধর ঠিক করেছিল, পরীক্ষা শেষে কন্যাকুমারীর কাছে রামেশ্বরম মন্দির দর্শন করতে যাবে। আজ সে নেই, কিন্তু তার ইচ্ছা অনুযায়ী এদিন রামেশ্বরম দর্শনে যান পরিবারের সদস্যরা। মমতা দেবী বলেন, ‘এটা ওর অপূর্ণ ইচ্ছে। তাই আমরা দেরি করিনি। ওর জন্যই মন্দির দর্শনে এসেছি।’
শ্রীধরের দিদিও কৃতী ছাত্রী। বর্তমানে তিনি ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন। বাবা জিএমআর-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে, মা ঘর সামলানোর কাজ করেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শ্রীধরকে ঘিরেই কাটত মমতাদেবীর। এখন আর সে নেই। দাঁত মাজানো থেকে খাইয়ে দেওয়া- প্রতিটি স্মৃতি আজও জীবন্ত তাঁর কাছে। মেধাতেই সে হারিয়েছে মারণ রোগকে। মৃত্যুকে। গোটা দেশ আজ কুর্নিশ করছে শ্রীধরের নাছোড় মনোভাবকে। সেই তো দেশের আসল হিরো।