পিতার স্বাস্থ্যহানি হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন পাঠনে পরিশ্রমী হলে ... বিশদ
করোনার ঠেলায় চণ্ডীবাবুর মতো বিপদে পড়েছেন রাজ্যের হাজার হাজার সুগার, হার্ট, কিডনি, স্ট্রোক সহ নানা সমস্যার রোগীরা। একে করোনা আতঙ্ক ও লকডাউনে সিংহভাগ দোকানপাট বন্ধ। অধিকাংশ ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ। প্রেসক্রিপশন মেনে এতদিন ধরে চলা ওষুধপত্র সব এখন দোকানে মিলছে না। অসুস্থ শরীরে ওষুধ না পেয়ে দূরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। বাড়িতে ওষুধের হোম ডেলিভারিও বন্ধ। ফলে দেশজুড়ে অতি সংক্রামক এই রোগ দমন করতে জারি কার্ফুর মতো পরিস্থিতির ঠেলায় দীর্ঘদিনের রোগজ্বালায় ভোগা মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। শরীর ঠিক রাখতে, সুগার কমাতে কারও কারও পাঁচ-সাত-দশ, এমনকী দীর্ঘ ১৫-২০ বছর ধরে মর্নিং বা ইভনিং ওয়াকের অভ্যাস। সে গুড়েও বালি! এখানেও করোনা আতঙ্ক। পার্ক বন্ধ, হাঁটা বন্ধ। চেনা মানুষের সঙ্গে দু’দণ্ড হেঁটে, হেসে বয়সকালের টেনশন হো হো করে উড়িয়ে দেওয়ার জো নেই। ফলে ওজন বাড়ছে। স্ট্রেসও বাড়ছে।
বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশিস মিত্র বলেন, রোগীদের বলেছি বাড়িতে হাঁটুন। ছাদে হাঁটুন। ঘরে হাঁটুন। অন্যান্য ব্যায়ামও পরিমিত হারে করুন। যে ওষুধ লেখা আছে, সেটা না পেলে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। নিশ্চয়ই বিকল্প জেনেরিক ওষুধ বলে দেবেন। বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরূপ দাস বিশ্বাস বলেন, শুধু তো রোগীরা নন, বহু চিকিৎসকেরও নানা অসুখ বিসুখ আছে। সাবধানে থাকতে হচ্ছে তাঁদেরও। বড়সড় বিপদ হলে কোথায় যাবেন, কী করবেন, কাকে হাতের কাছে পাবেন, সমস্যা রয়েছে। একটু জটিল রোগীদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর চেক আপের পাশাপাশি বেশকিছু রোগ ও রক্তপরীক্ষা করতে হয়। তাঁদের ক্ষেত্রে হাতের কাছে রোগ ও রক্তপরীক্ষা কেন্দ্র খোলা নেই। বাড়িতে এসে রক্ত ও ইউরিন সংগ্রহ করার ব্যবস্থাও বন্ধ। আমার মতে, সুস্থ থাকতে শারীরিক পরিস্থিতি বুঝে পরিমিত ব্যায়াম করুন। ছাদে বা বাড়িতে হাঁটুন। কাজের মধ্যে থাকুন। খাওয়া দাওয়া এমন করুন, যাতে আবার পেট খারাপ, ডায়ারিয়া না হয়।
বিশিষ্ট হার্ট সার্জেন ডাঃ কুণাল সরকার বলেন, ক্রনিক রোগীদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সত্যিই সাংঘাতিক। ইমার্জেন্সি হলে তো কথাই নেই! ক’দিন ইমার্জেন্সি অপারেশন চালিয়ে গেলাম। জানি না আর পারব কি না। পারলেও হাতেগোনা এবং একেবারে বাছাই করা। মনে হয়, অন্যান্য অসুখের রোগীদের সমস্যা কমাতে স্থানীয় স্তরে জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসা উচিত। একা মুখ্যমন্ত্রী কত করবেন!
বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথ ডাঃ রথীন চক্রবর্তী বলেন, করোনার চাপে এখন অন্য রোগীরাও দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন। বাড়িতে থাকা কিছু হোমিওপ্যাথিক ওষুধ এসময় রোজকার অসুখে কাজে লাগতে পারে। জ্বর, চোখমুখ লাল, খুব তাপমাত্রা থাকলে ‘বেলেডোনা’, কাশি, পিপাসা, জিভ শুকিয়ে গেলে, পায়খানা পরিষ্কার না হলে ‘ব্রায়োনিয়া’, প্রচণ্ড পেট খারাপ, জলের মতো পায়খানায় ‘অ্যালো’ আর বদহজমে ‘পালসেটিলা’ দেওয়া যেতে পারে।