শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের পাশাপাশি রয়েছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। মহকুমার বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙড়, জয়নগর থেকে শুরু করে সুন্দরবনের কুলতলি, মৈপীঠ প্রভৃতি এলাকার অসংখ্য মানুষ এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। এমনকী, বিষ্ণুপুর ও মগরাহাট থেকেও রোগীরা পরিষেবা নিতে আসেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রতিদিন দু’টি হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষের ভিড় হয়। মহকুমা হাসপাতালে ৬৮টি শয্যা থাকলেও রোগীর চাপ এতটাই যে প্রায় দু’জন রোগীকে একই শয্যায় থাকতে হচ্ছে। আবার সুপার স্পেশালিটিতে ৩০০টি শয্যা। হাসপাতালের মোট ৫২ জন চিকিৎসক ও ১৭০ জন নার্স আছেন। যদিও অনেক বিভাগেই বিশিষ্ট চিকিৎসক নেই। এমনকী, চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ ডি কর্মী ২০০ জন হলে স্থায়ী কর্মী মাত্র ২০ জন। শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাত্র দু’জন। এর মধ্যে একজন বন্ডের মাধ্যমে রয়েছেন। ফলে শিশুরোগ বিভাগে ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার পাওয়া যায় না। বহির্বিভাগেও সময়মতো এই ডাক্তারের দেখা মেলে না। ফলে দূরদূরান্তের অনেক মানুষজনকে ফিরে যেতে হচ্ছে। কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি এবং নিউরো সায়েন্স বিভাগে ডাক্তার না-থাকায় রোগীদের ভীষণ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। চর্মচিকিৎসক মাত্র একজন। হাসপাতালে অত্যাধুনিক পরিকাঠামোয় ২৪ ঘণ্টা ডায়ালসিস পরিষেবা চলে। কিন্তু নেফ্রোলজিস্ট না থাকায় এই পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। সপ্তাহে কতবার ডায়ালিসিস নিতে হবে তা জানার জন্য রোগীকে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজের নেফ্রোলজিস্ট দেখিয়ে আসতে বলা হয়! এমনই অভিজ্ঞতা কোনও কোনও রোগীর পরিবারের। মেডিসিন বিভাগে তিনজন ডাক্তারকে এই পরিষেবার দেখভালের দায়িত্ব নিতে হয়। এই সমস্যা নিয়ে রোগীদের পরিবারের লোকজন বলেন, ভর্তি থাকা রোগীদের দেখতে সকাল-বিকাল ছাড়া রাতে কোনও ডাক্তারের দেখা মেলে না। বুকে যন্ত্রণা নিয়ে কোনও রোগী এলে তাঁকে শুধুমাত্র অক্সিজেন দিয়েই কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়। হাসপাতালের শোচনীয় অবস্থাটা রাত-বিরেতেই বেশি ধরা পড়ে। অনেকেই বলেন, হাসপাতালের ডিজিটাল এক্স-রের প্লেট কম অথবা খারাপ। তাই অর্ধেক সময়ই তা বন্ধ থাকে। আবার ডাক্তার এক্স-রে করার জন্য ‘ইমারজেন্সি’ লিখে দিলেও তা ওইদিনে করতেই চান না দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। রোগীকে বলা হয়, ‘অন্যদিন আসুন।’ রাতে জরুরি দরকারেও এক্স-রে হয় না। এমনকী, রাত ৮টার পর ইসিজি হয় না এই হাসপাতালে। ফলে বিপদ বুঝে তা বাইরে থেকে করিয়ে আনতে হয়।