সংবাদদাতা, তেহট্ট: টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে পটল, লঙ্কা, বেগুন সহ নানা ধরনের সব্জি চাষ। চাষিরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সেই ক্ষতি থেকে বাঁচতে চাষিদের ভরসা জোগাচ্ছে লাফা ও বরবটি। তেহট্ট সহ নদীয়া জেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা জানাচ্ছেন, উম-পুন ঝড়ে জমির ধান, পাট, কলা সহ বিভিন্ন সব্জির অনেক ক্ষতি হয়েছিল। করোনা মহামারীর জেরে লকডাউনে আর্থিক মন্দা চলছিল। সেই ক্ষতি সামলে চাষিরা সব্জি চাষে ভর করে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ভাবছিলেন। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে জমিতে জল জমতে শুরু করে। জমা জলে সব্জি নষ্ট হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কায় দিন গুনছিলেন এলাকার চাষিরা। তাঁদের এই আশঙ্কা থেকে রেহাই দিল লাফা ও বরবটি। এলাকার চাষিরা বলেন, বৃষ্টিতে পটল, ঝিঙে, উচ্ছে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এই সব ফসলের চাষে খরচ বেশি। কারণ জমিতে মাচা তৈরি করতে হয়। বৃষ্টিতে গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেই গাছ তুলে লাফা ও বরবটি চাষ শুরু করেছি। জুনের প্রথম সপ্তাহেই এইসব জমিতে লাফা বা বরবটি চাষ শুরু করেছি। তাঁরা বলেন, খুব কম খরচে লাফা ও বরবটি চাষ করা যায়। এক বিঘা জমিতে এই বাজার দর থাকলে ৪০দিনেই বেশ কয়েক হাজার টাকার লাফা বিক্রি করা যায়। তাই জমির পটল, বেগুন বা অন্যান্য সব্জির ক্ষতির অনেকটাই পুষিয়ে দিচ্ছে লাফা ও বরবটি।
তেহট্টের সাহাপুরের চাষি সুদেব ঘোষ বলেন, আমি ১২হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘা জমিতে ওল লাগিয়েছিলাম। এবার অত্যধিক বৃষ্টির জন্য গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই গাছ তুলে জুনের প্রথম সপ্তাহে বরবটি লাগিয়েছিলাম। এবার বরবটির ফলন খুব ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে ১০-১২টাকা কেজি দরে বরবটি বিক্রি হচ্ছিল। এখন পাইকারি বাজারে ১৮-২০টাকা কেজি দরে বরবটি বিক্রি হচ্ছে। বরবটি বিক্রি করে আমার চাষের ক্ষতি কিছুটা হলেও পূরণ হবে। আর এক চাষি বলেন, আমি ১২কাঠা জমিতে পটল চাষ করেছিলাম। পটল ভালো উঠতে শুরু করেছিল। পরপর বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে গাছ নষ্ট হয়ে যায়। তখন ক্ষতির আশঙ্কায় ঘুম চলে গিয়েছিল। এরপরে ওই জমিতেই লাফা চাষ করি। এখন লাফা যে দামে বিক্রি হচ্ছে তাতে আমার ক্ষতির আশঙ্কা আর নেই।