কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ভালোই হবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। ... বিশদ
বোরো চাষে জলের প্রয়োজন হয় বেশি। এবারে বোরো চাষ কতটা হবে, জলাধার থেকে কতটা জল পাওয়া যাবে, ভূগর্ভস্থ জলের অবস্থাটাই বা কেমন, এসব প্রশ্নই চাষিদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। জলাধারের জলের পাশাপাশি গভীর ও অগভীর নলকূপের জলেও রাজ্যে বোরো চাষ হবে। ফি বছর যেমন হয়। এবারে শেষদিকে ভালো বর্ষা হয়নি। সেদিক থেকে বোরোতে জল পাওয়ার সমস্যা কিছুটা হতে পারে বলেই মনে করছেন চাষিরা। তবে সেচের জল নিয়ে একটা টানাপোড়েন থেকেই যায়। পুকুর, ডোবা, খালবিল, নদীনালাতেও এবারে জল কম আছে। গত ক’বছর ধরেই দেখা গিয়েছে, জলস্তরের অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। মাটির নীচের জল তোলার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। কারণ এ রাজ্যে গরমের পারদ চড়ে ওই সময়ে। সেচের জল তো দূরঅস্ত। পানীয় জল জোগাতেই হিমশিম অবস্থা হচ্ছে গরমে।
চাষিদের সেচের কথা মাথায় রেখে স্বল্পমেয়াদি জাত বেছে নিতে হবে। চৈত্রের মাঝামাঝি ধান পেকে যাবে। কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টিতে প্রতিবছর যে ক্ষতি হয় তার ভয় কমবে। আই ই টি ২২৩৩, পি এন আর ৩৮১, রেণু, অন্নদা, আই ই টি ১২১৩৩, শতাব্দী এসব জাত ওই সময়ের মধ্যে পেকে যায়। আও এমন ধান আছে। স্থানীয় কৃষি দপ্তরে খোঁজখবর নিয়ে বোরো চাষের এগনোই ভালো। সেচের জলের ব্যাপারেও নিশ্চিত হতে হবে। জলাধারের জল মিলবে, এমন আশ্বাস পেলেই বোরো ধানের বীজ ফেলা দরকার। আরও নানা জাত আছে কৃষি দপ্তরের হিসেবে। চৈত্রের শেষ দিকে এসব ধান পাকবে। যেমন আই আর ৬৪, ৩৬ ললাট, ক্ষিতীশ, রত্না, ভূবন, আদিত্য ইত্যাদি। এখন কিছু নতুন প্রজাতির ধানও বেরিয়েছে।
বোরো চাষে সেচের জল লাগে প্রচুর। তাই সব দিক ভেবেই এগনো উচিত। এবারে সেচের টানে আমনের ক্ষতি হয়েছে নিচু এলাকায়। চাষিরাও চাইছেন এই ক্ষতি বোরো চাষ করে পুষিয়ে নিতে। জলাধার থেকে রবি চাষের জল দেওয়া হয়। চাষিরা তাই দাবি করছেন, জলাধার থেকে অন্তত এবারে চাষের জল দেওয়া হোক।
বোরো চাষে নামার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন শস্য পর্যায়ের পরিবর্তন করা। একই ফসল বা একই জাত। একই জমিতে বারবার না করা। আগের ফসল কাটার পর গ্রীষ্মকালীন চাষ দেওয়া, আল ছাঁটা, নাড়াগুলি এক জায়গায় জড়ো করে পুড়িয়ে দেওয়া দরকার। পরবর্তী ফসলে আর রোগ জীবাণু ছড়াবে না। বীজ শোধন করে নিতে হবে। বীজ হতে হবে শংসিত। প্রতি কেজি বীজে ৩ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সমস্ত আক্রান্ত ফল গাছ থেকে তুলে কীটনাশক দিয়ে নষ্ট করে দিতে হবে। জলদি জাতের ফসল বুনলে এই ধরনের মাছির উৎপাত কম হয়। জমি বারে বারে চাষ দিয়ে ‘পুত্তলি’ নষ্ট করতে হবে। কাটারিল গুঁড়ো ছড়ালে উপকার পাওয়া যায়।
ঝোলা গুড়ের সঙ্গে ম্যালাথিয়ান বা কাটারিল বা অন্য কীটনাশক মিশিয়ে জমিতে ৮-১০ জায়গায় দড়ি ডুবিয়ে ঝুলিয়ে রাখলে পূর্ণাঙ্গ ফল ছিদ্রকারী মাছি আকৃষ্ট হয়ে ওই গুড় খায়। পরে মারা যায়। এই মিশ্রণ মাটির ভাঁড়ে করে জমির বিভিন্ন জায়গায় রেখে দিলেও কাজ হয়। চাষিদের এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।