বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে আরামবাগে বিজেপি ভালো ফল করার পর দল বদলের হিড়িক দেখা যায়। বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা দল বদল করে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান। পরে অবশ্য তাঁদের মধ্যে অনেকেই ফের শাসক দলে ফিরে আসেন। কিন্তু, সেই যোগদানের তালিকায় এতদিন পর্যন্ত বাদ ছিলেন খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নইমুল হক ওরফে রাঙা ও খানাকুল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বাদশা সাহা। কিন্তু, এদিন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের সবুজ সংকেতে তাঁরা আবারও হুগলি জেলা তৃণমূল দলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হাত ধরে দলে ফিরলেন।
সেই সঙ্গে এদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন বিজেপির আরামবাগ জেলা কমিটির সদস্য তথা ৪৩ নম্বর জেডপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি রামকৃষ্ণ মাইতি, অখিল জানা, পিন্টু চোঙদার ও অনির্বাণ সরকার। এব্যাপারে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, যাঁরা তৃণমূল দল থেকে আমাদের দলে এসেছিলেন, তাঁরা কেউই সক্রিয়ভাবে আমাদের দলের কোনও কাজে অংশ নেননি। সুতরাং তাঁরা দলে থাকলে কিংবা দল ত্যাগ করলে, দলের কিছু ক্ষতি হবে না। তাদের নামে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগও ছিল। তাছাড়া ওই দলত্যাগীরা কখনই আমাদের দলের আদর্শকে মেনে নিতে পারেনি। যে কারণে তারা দল ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমাদের দলেরও একজন যোগ দিয়েছে বলে শুনেছি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, খানাকুল এলাকায় এর আগেও দলত্যাগী বেশ কয়েকজন নেতাকে পুনরায় দলে ফেরানো হলেও নইমুল হক ও বাদশা সাহাকে দলে ফেরানো হয়নি। জানা গিয়েছে, দলের একাংশ তাঁদের দলে ফেরাতে আপত্তি জানায় জেলা নেতৃত্বকে। অন্যদিকে, দলের অপর একটি অংশ ওই দুই নেতাকে দল থেকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেন। তাই দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই এদিন কলকাতায় ফিরহাদ সাহেবের দলীয় কার্যালয় থেকে পুনরায় তাঁদের দলের পতাকা তুলে দেওয়া হয়। এনিয়ে ফিরহাদ সাহেব বলেন, ভুল বুঝে তাঁরা বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শ ও অনুপ্রেরণায় তাঁরা আবার দলে ফিরে এসেছেন।
এব্যাপারে হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, জেলা নেতৃত্বর সিদ্ধান্তই শেষ কথা নয়। ওই দুই নেতাকে দলে ফেরানোর জন্য দলের নেতা-কর্মীরা আমার কাছে মত প্রকাশ করেছিলেন, তা আমি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম। তারপর তাঁদের সিদ্ধান্তই এদিন কার্যকর হয়েছে। তবে এখন থেকে আমরা প্রত্যেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে মানুষের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে চাই।
দলে পুনরায় যোগ দিয়ে নইমুল সাহেব বলেন, কিছু ভুল বোঝাবুঝির জন্য দলত্যাগ করে বিজেপিতে গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ কখনই ভুলতে পারিনি। যে কারণে আবারও তৃণমূলে ফিরে এসেছি। এখন থেকে আমাদের নেত্রীর আদর্শকে সামনে রেখেই আবারও একসঙ্গে দলের হয়ে কাজ করতে চাই।
যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, ওই দুই নেতা ফের শাসক দলে যোগদান করায় খানাকুল এলাকায় শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল আরও বাড়বে। পুরভোটের আগে যা শাসক দলের কাছে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে। যদিও তৃণমূলের এক নেতা বলেন, আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। আমাদের দলে সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই দল করে। বরং বিজেপির চার নেতা আমাদের দলে নাম লেখানোয় বাড়তি সুবিধা হবে। পুরভোটে যার প্রভাব গেরুয়া শিবির ভালো ভাবেই টের পাবে। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া রামকৃষ্ণ মাইতি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে সিএএ ও এনআরসি নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করেছে, তা আমি ওই দলে থেকে মেনে নিতে পারছিলাম না। যে কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে তৃণমূলে যোগদান করেছি।