অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন রাত প্রায় ৮টা নাগাদ তৃণমূল কর্মী হাফিজুল শেখ তাঁর বাড়ি থেকে সোদপুর সিনেমাতলা এলাকায় আসছিলেন। বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে ওই তৃণমূল কর্মীকে একা পেয়ে পথ আটকে দাঁড়ায় দুষ্কৃতীরা। এরপর তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। হাফিজুল সাহেবের মাথা, পিঠ ও পা গুরুতর ভাবে জখম হয়। এব্যাপারে জখম হাফিজুল সাহেব বলেন, এর আগেও এলাকায় একাধিকবার বিজেপির লোকজন হিংসা, সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে না। কিন্তু, সেই হুমকি না মানায় ওরা আমাকে রাস্তায় ফেলে প্রাণে মারার চেষ্টা করে।
অন্যদিকে, দলীয় কর্মী হাফিজুলকে মারতে দেখে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য পিন্টু কোটাল নিজের বীজের দোকান থেকে বের হতেই তাঁর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। সেই সময় দোকানে ছিলেন পিন্টুবাবুর দাদা প্রকাশ কোটাল। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও জখম হয়েছেন। আক্রান্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য পিন্টুবাবু বলেন, প্রথমে আটটি মোটর বাইকে চেপে জনা ১৫ বিজেপির লোকজন আমাদের দলীয় কর্মী হাফিজুলের উপর চড়াও হয়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে আমি দোকান থেকে বের হতেই, ওই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীর দল ধারালো আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমাকে ব্যাপক মারধর করে। আমার কাছে থাকা ব্যবসার নগদ ৩৫ হাজার টাকাও ওরা ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে। আমাকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি চালানো হয়। যদিও গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সেই সময় আমার দাদা তারকেশ্বর থেকে সোদপুর দোকানে ফিরেছিলেন। আমাকে মারধর করতে দেখে দাদা এগিয়ে এলে তাঁকেও ওরা মারধর করে।
পঞ্চায়েত সদস্যের দাদা প্রকাশবাবু বলেন, ভাইকে বাঁচাতে গেলে ওরা আমাকেও ব্যাপক মারধর করে। আমার কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে ওরা চম্পট দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পুরশুড়া ব্লকের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতে মোট ২১টি গ্রাম সভা রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে পঞ্চায়েতে ভালো ফল করে গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, বিজেপি উত্থানের কারণেই এর আগেও একাধিকবার পুরশুড়া ব্লকের অধীনে থাকা বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করলেও লোকসভা নির্বাচনে ২১টি গ্রাম সভার মধ্যে ১৩টিতে এগিয়ে যায় বিজেপি। আর তারপর থেকেই রাজনৈতিক ভাবে এলাকা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে শাসক বিরোধী দুই দল।
খানাকুল ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি খোকন মল্লিক বলেন, বিজেপি জনসংযোগ তৈরি করতে পারছে না। রাজ্যের সম্প্রতি তিনটি উপনির্বাচনে ফলাফল দেখে ওরা বুঝতে পেরেছে, রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব নয়। যে কারণে, আমাদের দলীয় নেতা, কর্মী পঞ্চায়েত সদস্যদের মারধর করেছে। তবে ওরা এভাবে কখনই তৃণমূলকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।
এদিকে, দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন পুরশুড়া ৩৬ জেডপির বিজেপির মণ্ডল সভাপতি হরপ্রসাদ বাগ। তিনি বলেন, উপ নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে শাসক দলের লোকজন বিজয় মিছিলের নাম করে এলাকার সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। যে কারণে গ্রামের বেশ কিছু পরিবার এখনও ঘর ছাড়া। আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। কিন্তু, শাসক দলের লোক বলে পুলিস কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যে কারণে জনরোষে ওই পঞ্চায়েত সদস্য ও তৃণমূলের কর্মীদের আক্রান্ত হতে হয়েছে। এর সঙ্গে বিজেপি কোনওভাবেই যুক্ত নয়। ওরা আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ আনছে।