পেশাদারি ও ব্যবসায়িক কর্মোন্নতি ও ধনাগম যোগ। শারীরিক সমস্যায় মানসিক অশান্তিভোগ। আঘাত লাগতে পারে। ... বিশদ
জমির বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে দু’সপ্তাহ ধরে অভিযানে চালাচ্ছে শিলিগুড়ি পুলিস কমিশনারেট। ইতিমধ্যে তারা ১০৪ জন জমি মাফিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। দার্জিলিং জেলা পুলিসের ফাঁসিদেওয়া, নকশালবাড়ি ও খড়িবাড়ি থানার পুলিসও জমির বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এবার নকশালবাড়ি থানার পুলিসের জালে ধরা পড়ল বালি মাফিয়া।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দক্ষিণ রথখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে নকশালবাড়ি থানার পুলিস। ধৃতের বাড়ি এলাকাতেই। অভিযোগ, নদী থেকে বেআইনিভাবে তোলা বালি সে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর, চোপড়া এবং প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে পাচার করত। এজন্য স্থানীয় বনবস্তির পতিত জমি দখল করে বালির ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ তৈরি করেছিল।
ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর নকশালবাড়ি থানার পুলিসের সন্দেহ, শুধু ধৃত যুবক নয়, ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সঙ্গে আরও কিছু বালি মাফিয়া রয়েছে। যারা এলাকায় বালি পাচারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ। তাই ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও খোঁজ চলছে।
এদিন সকালে নকশালবাড়ি থেকে আরও দুই বালি পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিস সূত্রের খবর, ধৃতদের নাম মনু মল্লিক ও রাজু ওঁরাও। প্রথমজন মাল্লাবাড়ি এবং দ্বিতীয়জন রকমজোতের বাসিন্দা। দু’জনেই ট্রাক্টর চালক। মাল্লাবাড়ির মেচি নদী থেকে বেআইনিভাবে বালি বোঝাই করে দু’টি ট্রাক্টর নিয়ে নকশালবাড়ির দিকে আসছিল অভিযুক্তরা। নকশালবাড়ি বাজারের কাছ থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিস জানিয়েছে, তল্লাশি অভিযানের সময় ট্রাক্টরে বোঝাই বালির সপক্ষে কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেননি ট্রাক্টর চালকরা। তাই অবৈধভাবে নদী থেকে বালি তুলে পাচারের অভিযোগ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে মাইনিং ও মিনারেল আইন সহ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ট্রাক্টরগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নকশালবাড়ি এলাকায় বালি মাফিয়াদের দাপট দীর্ঘদিনের। এখানকার নেপাল সীমান্তবর্তী পানিট্যাঙ্কিগামী রাস্তার ধারেও বালির বেআইনি ডাম্পিং গ্রাউন্ড রয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী থেকে বালি ও পাথর তোলার পর সেখানে নিয়ে আসা হয়। এখানে মেশিনের সাহায্যে বালি ও পাথার আলাদা করার পর তা পাচার করা হয়। পুলিস ও প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে যাথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমি ও বালি, পাথরের বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ অবস্থায় শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং জেলা পুলিস জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পর এদিনই প্রথম পুলিসের জালে বালি মাফিয়া ধরা পড়েছে।
শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং জেলা পুলিস জানিয়েছে, মহানন্দা সহ বিভিন্ন নদীর বুকে গড়ে ওঠা বালি খাদানে নজর রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় বেআইনি খাদান বন্ধ হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।