কর্মরতদের উপার্জন বৃদ্ধি পাবে। শরীর-স্বাস্থ্য ভালোই যাবে। পেশাগত পরিবর্তন ঘটতে পারে। শিল্পী কলাকুশলীদের ক্ষেত্রে শুভ। ... বিশদ
সোমবার মাঝরাতে হাঁড় হিম করা ঘটনাটি ঘটে ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের বন্ধ কালচিনি চা বাগানের গুদাম লাইনে। হাতি মানুষের এই রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের ঘটনাটি মাত্র ১০-১৫ মিনিটের। ঘটনার আকস্মিকতায় মঙ্গলবার সকালেও কাঁপছিলেন তিন সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ। স্ত্রীর সাহস ও উপস্থিত বুদ্ধির তারিফ করছেন স্বামী রুস্তম আনসারি সহ প্রতিবেশীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার মাঝরাতে অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। টিনের বেড়া দেওয়া ঘরে এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিলেন নাসিমা। পাশের আলাদা একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন স্বামী রুস্তম। কিন্তু হঠাৎ মাঝরাতে বৃষ্টির মধ্যেই মটমট শব্দে ঘুম ভাঙে নাসিমার। চোখ খুলতেই দেখেন ভয়ঙ্কর এক দৃশ্য। মুহূর্তের মধ্যে তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থা কেটে যায় তাঁর। দেখেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের একটি দাঁতাল হাতি তাঁর শোওয়ার ঘরের টিনের বেড়া ভেঙে শুঁড় ঢুকিয়ে দিয়েছে। শিশু তিনটিকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে বাইরে টেনে নিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে দাঁতালটি। প্রথমে ভয় পেলেও তিন সন্তানকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে নাসিমা হাতিটির শুঁড় ঘরের ভাঙা টিনের বেড়ার মধ্যে চেপে ধরেন। তখন দাঁতালটির শুঁড়ের মুঠি আলগা হয়ে যায়।
নাসিমাদের ঘরের মধ্যে ছিল চাল ও আটার প্যাকেট। তিন সন্তান হাতিটির শুঁড়ের নাগালের বাইরে চলে আসতেই নাসিমা বুদ্ধি করে ভাঙা টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে চাল ও আটার প্যাকেট হাতিটির মুখের কাছে ছুঁড়ে দেন। হাতিটি চাল আটা খাওয়া শুরু করতেই সেই ফাঁকে নাসিমা সন্তানদের নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যান। এদিকে, গ্রামে হাতি ঢোকার খবর পেয়ে শ্রমিক লাইনে শোরগোল পড়ে যায়। শ্রমিকদের হইহুল্লরে নাসিমাদের দেওয়া চাল, আটা সাবার করেই দাঁতালটি ফের বক্সার জঙ্গলের দিকে চলে যায়। মঙ্গলবার সকালে হাতি-মানুষের এই লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে নাসিমা বলেন, তিন সন্তানকে বাঁচাতে জীবন বাজি রাখা ছাড়া আমার কাছে তখন আর কোনও উপায় ছিল না। রাতের ঘটনার পর এখনও আতঙ্ক যাচ্ছে না। সন্তানরাও আতঙ্কে আছে।