কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সৈকত চট্টেপাধ্যায় বলেন, শহরে ১৫০ কোটি টাকার পানীয় জল প্রকল্পের কাজ চলছে। অনেক জায়গায় মোটা পাইপ পুঁততে জেসিবি ছাড়া উপায় নেই। সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে এই কাজের বিষয়ে আগেও পুরসভার বৈঠক হয়েছে। নাগরিক পরিষেবার স্বার্থে পাইপ পোঁতার ওই কাজ চলছে। তবে ল্যান্ড ফোনের পরিষেবাও যাতে ভেঙে না পড়ে সেটাও দেখা দরকার। আমরা বিএসএনএলের আধিকারিকদের সঙ্গে এনিয়ে শীঘ্রই আলোচনা করব। বিএসএনএলের এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সুমেন্দ্র কুমার চন্দ্র রায় বলেন, জেসিবি দিয়ে মাটি কাটায় কোটি কোটি টাকা মূল্যের তার কেটে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। অন্যভাবে মাটি কাটলে এতবড় ক্ষতি এড়ানো যেত। অনেক গ্রাহকের অভিযোগ আসছে। কর্মীরা মেরামতি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। তার ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে থাকছে। পাইপ লাইন পোঁতার ক্ষেত্রে বিএসএনএলের সঙ্গে পুরসভার কর্মীরা সমন্বয় রেখে কাজ করলে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যেত। বিএসএনএলের টেলিকম ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার হরেন্দ্র নাথ দাস বলেন, জলপাইগুড়ি শহর ও শহরতলিতে ১৪ হাজার ল্যান্ড ফোনের সংযোগ রয়েছে। তারমধ্যে প্রায় ২০০০ সংযোগ এই মুহূর্তে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। জেসিবি দিয়ে পাইপ লাইন বসানোর জন্য গভীর গর্ত করায় কেবল কেটে গিয়েছে। পুরসভার উন্নয়ন তো হবে, আমাদের পরিষেবার দিকটিও তো পুরসভাকে দেখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা পুরসভার সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনা করব। জরুরি পরিষেবার সংযোগ কোথাও বিচ্ছিন্ন হলে সেটা দ্রুত সারাইয়েরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
পুলিসের ডিআইজি অফিসের এক আধিকারিক বলেন, ক’দিন আগে আমাদের টেলিফোন লাইন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে অবশ্য বিএসএনএলের কর্মীরা এসে সংযোগ জুড়ে দিয়েছেন। এদিকে, একই অবস্থা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ল্যান্ড লাইনের। কোনওটি সারাই হচ্ছে তো কোনওটি অকেজো হয়ে পড়ছে। শহর জুড়ে গত বর্ষার শেষের দিকে এসে পানীয় জলের পাইপ লাইন পোঁতার কাজ শুরু হয়। তবে আগে শহরের অলিগলিতে সেই কাজ চলতে থাকলেও এখন গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরের সামনের রাস্তাগুলিতেও ওই কাজ জোরকদমে চলছে। দিনরাত জেসিবি দিয়ে পানীয় জলের পাইপ লাইন পোঁতার কাজ চলছে। শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে টেলিফোন পরিষেবা বিঘ্নিত হয়ে পড়েছে। দপ্তরে অভিযোগ করেও অধিকাংশ বাড়ির সংযোগ সারাই হচ্ছে না। ফলে অনেকের বাড়ির বহু পুরনো টেলিফোন লাইন এখন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। অনেক ব্যবসায়ীও এহেন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন। পাইপ লাইন পোঁতার ফলে অনেক রাস্তা খারাপ হওয়ায় এমনিতেই বাসিন্দারা ক্ষোভে ফুঁসছেন। অনেক জায়গায় গর্তগুলি ভরাট করে পাথর বিছানোও হয়নি।
বাসিন্দারা বলেন, আজকাল মোবাইল ফোনের বহুল ব্যবহারে ল্যান্ড ফোনের গুরুত্ব এখন অনেক কমে গিয়েছে। কিন্তু তাই বলে একেবারে প্রয়োজন নেই তা কিছুতেই বলা যাবে না। সরকারি অফিসের আধিকারিকরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও অফিসিয়াল কাজের জন্য তাঁদেরকে ল্যান্ড ফোনের উপর নির্ভর করতে হয়। সিংহভাগ সরকারি অফিসেই ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করা হয়। আবার বিভিন্ন জরুরি পরিষেবার নম্বরও বিএসএনএলের হয়। যেমন থানা, হাসপাতাল, দমকল প্রভৃতি। কিন্তু সেই ল্যান্ড ফোন পরিষেবাই জলপাইগুড়ি শহরে কার্যত ভেঙে পড়েছে। সেইসঙ্গে ইন্টারনেট পরিষেবাও বিঘ্নিত হচ্ছে। বর্তমান সময়ে নানা বেসরকারি সংস্থা ইন্টারনেট পরিষেবা দিয়ে থাকে। তবে এখনও সিংহভাগ গ্রাহক ব্রডব্রান্ড পরিষেবার জন্য বিএসএনএলের উপরই নির্ভর করেন। কিন্তু জলপাইগুড়ির মতো জেলা শহরে সেই পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একদিকে উন্নয়ন করতে গিয়ে অন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবার দিকটি দেখা হচ্ছে না। পুরসভাকে সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা উচিত ছিল।