কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা মনোরঞ্জন ঘোষ, সুমন ঘোষরা বলেন, রূপ সনাতন গোস্বামীর জন্মস্থানের টানে আমরা মাঝে মধ্যেই মাধাইপুরের মোড়গ্রামে আসি। পবিত্র এই স্থানের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা দরকার। রূপ সনাতন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত তথা গৌড় মহাবিদ্যালয়ের সংস্কৃতের অধ্যাপক বিজয় ঘোষ বলেন, মন্দিরের মাঠ সংলগ্ন চারপাশে বিভিন্ন প্রকল্পের খনন কার্য করার সময় অসংখ্য মূর্তি পাওয়া যাচ্ছে। এই মূর্তিগুলি প্রমাণ করে এর প্রাচীনত্ব কতটা। এই স্থানগুলিতে ভালো করে খনন কার্য করলে অনেক প্রাচীন নির্দশন পাওয়া যাবে। রূপ সনাতনের জন্মস্থান ঘুরলে আমরা অনেক কুণ্ডু পাই যাকে আমরা পুষ্করণী বলি। এখানে রাধাকুণ্ডু, শ্যামকুণ্ডু, ললিতা বিশাখা কুণ্ডু এরকম অনেক কুণ্ডু রয়েছে। সেগুলি সংস্কারের অভাবে বুজে যাচ্ছে। আমরা চাই সেগুলি সংস্কার করা হোক। এখন মন্দিরের চারপাশে ভক্তির সুন্দর পরিবেশ গড়ে উঠেছে। এই মন্দির আরও মানুষের কাছে পৌঁছে যাক। পর্যটনের বিকাশের স্বার্থে আমরা এই পবিত্র স্থানটির দ্রুত সংস্কারের আবেদন জানাই। রূপ সনাতন মন্দির কমিটির সম্পাদক দিবাকর ঘোষ বলেন, এই মন্দির এখন জেলার অন্যতম ভক্তির স্থান হিসাবে খ্যাত। প্রচুর ভক্ত এখানে ভিড় করছেন। সম্প্রতি বহু মূর্তির নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় রাধাকুণ্ডু ও শ্যামকুণ্ডের ঘাট রয়েছে। সেগুলি সংস্কার করা প্রয়োজন। এছাড়া আরও নানা পরিকল্পনার কথা সরকারের বিভিন্ন মহলে জানিয়েছি। পরিবেশ আরও সুন্দর করার জন্য পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। যাতে ভক্তদের কোনও অসুবিধা না হয়। কাজগুলি হলে মালদহের পর্যটনে এই মন্দির আরও পাকাপোক্ত জায়গা করে নেবে। বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। আমরা ইতিমধ্যেই জেলাশাসক এবং বিডিওকে সমস্ত পরিকল্পনার কথা জানিয়েছি। তাঁরা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।
রূপ সনাতনের মন্দিরটি সাহাপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে। পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান উকিল মণ্ডল বলেন, মন্দিরটি আমাদের পঞ্চায়েতের মধ্য রয়েছে। এটা আমাদের কাছে খুব গর্বের স্থান। এই মন্দিরটি যেন জেলার মধ্যে অন্যতম ভক্তির স্থান হয়ে ওঠে এটা চাই। মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবিষয়ে কথা হয়েছে। ওখানে পর্যাপ্ত লাইটেরও ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মন্দির সংলগ্ন স্থানে যে কুণ্ডুগুলি রয়েছে তা সংস্কার করা হবে। উন্নতমানের ঘাট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। মানুষের সুবিধার্থে একটি শিশু পার্কের কথাও ভাবা হচ্ছে। যাতে প্রচুর ভক্ত আসতে পারে, মন্দিরের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই কাজগুলির পাশাপাশি ভেবেছি ওই মন্দিরের সংলগ্ন জমিগুলিতে চাষ করা হবে। এলাকার বহু মানুষকে ১০০ দিনের কাজে লাগানো হবে। জমি থেকে ভালো আয় হবে। তা থেকে মন্দিরের উন্নয়ন করা যাবে। পুরাতন মালদহ ব্লকের বিডিও নরোত্তম বিশ্বাস বলেন, মন্দিরের উন্নয়ন নিয়ে নানা প্রস্তাব পেয়েছি। তা আমরা জেলায় পাঠিয়ে দিয়েছি। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ হবে।
মালদহ জেলার পর্যটন কেন্দ্র বললেই গৌড়, আদিনা, রামকেলির মতো ঐতিহ্যবাহী স্থানের নাম প্রথমে আসে। তবে সম্প্রতি পুরাতন মালদহ ব্লকের মাধাইপুর রূপ সনাতন মন্দিরের কথা জেলার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। রূপ সনাতন গোস্বামী হলেন মহাবৈষ্ণব। কথিত আছে ১৫১৫ খ্রীষ্টাব্দের ১৫ জুন জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তিতে তাঁর সঙ্গে রামকেলিতে দেখা করতে স্বয়ং শ্রীশ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু এসেছিলেন। মালদহ জেলার মাধাইপুর মোড়গ্রামের মাধাইপুরে মামার বাড়িতে রূপ সনাতন জন্মগ্রহণ করেন বলে বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। এজন্য মাধাইপুর স্থানটি প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। জেলা থেকে প্রচুর মানুষ এখানে পিকনিকের জন্য ও ঘুরতে ছুটে আসেন। তাই রূপ সনাতন গোস্বামীর জন্মস্থানটি সম্পূর্ণভাবে সংস্কারের দাবি উঠেছে। সংস্কার হলে এখানে আরও মানুষের ভিড় বাড়বে। গ্রামের গরিব মানুষের কর্মসংস্থানের পথ প্রশস্থ হবে। মালদহের পর্যটন আরও প্রসারিত হবে।