কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ামক শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, আমরা দ্রুত ফলপ্রকাশের জন্যে চেষ্টা চালাচ্ছি। অনেকগুলি বিষয় এবং কিছু নির্দিষ্ট অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হচ্ছে। আমরা আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে ফল সামনে আনা যাবে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রসূন রায় বলেন, গোটা ঘটনাটি শিক্ষার্থীদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। কেনই বা ফলাফল প্রকাশ করা হল, কেন তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্থগিত করে দেওয়া হল, তারপরে ফলপ্রকাশে এত সময় লাগছে কেন? আমি অন্তত বুঝি না। যদি ফলাফল অসম্পূর্ণই হয় তবে প্রকাশই কেন করা হয়েছিল। যেভাবে দু’টি বর্ষের অনার্সের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে তা নিন্দাজনক। পার্ট-১ এর শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছে না তাঁরা পার্ট-২ নিয়ে কী ভাববে, পার্ট-২ ভাবতে পারছে না তারা পরবর্তী পদক্ষেপ কী করবে। এএক তুমুল অরাজকতা চলছে। শিক্ষাবিজ্ঞানের গবেষক তথা স্কুল লিডারশিপ ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের রাজ্য রিসোর্স পার্সন প্রসেনজিৎ পাল বলেন, মূল্যায়ণ শিক্ষা বিজ্ঞানের একটি বৃহৎ সমস্যার জায়গা। ফলপ্রকাশের ক্ষেত্রে যে দায়িত্ববোধের পরিচয় দেওয়ার কথা ছিল তাও দেখা যায়নি। তারপরেও যেভাবে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ফলাফল নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তা অসহনীয়। শিক্ষার্থীদের দ্বিধার দ্রুত অবসান হওয়া উচিত। বাৎসরিক এই মূল্যায়ন বিভ্রান্তি নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ করা উচিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পদাধিকারী বলেন, সমস্ত ফলাফল নিয়ে অভিযোগ তো ছিল না। ফলে সার্বিকভাবে ফলাফল স্থগিত করে দেওয়াতে একটি ত্রুটি হয়ে গিয়েছে। ওই ত্রুটি না হলে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফলাফল নিয়েই কেবল সংশয় থাকত। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার পরীক্ষার্থীর সকলেরই ভাগ্যও ঝুলে রইল।
গত ৩ জানুয়ারি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় পার্ট-১ ও পার্ট-২ অনার্সের ফল প্রকাশ করেছিল। সেই ফল প্রকাশের পর দেখা যায় পার্ট-১ এ আগের বারের থেকে প্রায় ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী কম পাশ করেছে। অন্যদিকে, পার্ট-২ তে ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী কম পাশ করেছে। এই পাশের হার নিয়েই হৈচৈ শুরু হয়। তারপরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে ফলাফল পুনর্বিবেচনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। জানা গিয়েছে, পার্ট-১ এ ৭৯৬৮ জন ও পার্ট-২ তে ১১ হাজার ৬৩৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল। ডামাডোলের জেরে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল কার্যত ‘স্থগিত’ বলে নোটিস জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়। যা নিয়ে আগে থেকে বিতর্কে থাকা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ফের একদফা বিতর্কে জড়ায়।
ঘটনার পর প্রায় ১৫ দিন সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় নতুন করে ফলপ্রকাশ করতে পারেনি। এমনকী জানুয়ারি মাসের মধ্যেও ফলপ্রকাশ করা যাবে এমন নিশ্চয়তা কর্তৃপক্ষ জোর গলায় দিতে পারছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অস্থিরতার জেরে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর ভাগ্য ঝুলে রয়েছে। এনিয়ে পরীক্ষার্থী থেকে অভিভাবক এমনকী ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যেও ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে। অভিযোগ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষাবর্ষের ধারাবাহিকতা রাখতে পারেনি। গতবছর শিক্ষাবর্ষ ধরে ফলাফল প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এবারের ফলপ্রকাশ জটিলতার জেরে তা আবার পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে গৌড়বঙ্গ থেকে অন্যত্র পঠনপাঠন করতে চাওয়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েই আছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত ফলাফল পর্যালোচনা করতে অনেকটাই সময় লাগছে। এরপর পরীক্ষার্থীদের রিভিউ করার সুযোগ দিতে হবে। সবমিলিয়ে ফলাফল কবে বের করা যাবে তা নিয়ে খোদ কর্তৃপক্ষই সংশয়ে আছে।