কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
মালদহ পুরাতত্ত্ব বিভাগের জুনিয়র কনজারভেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুব্রত নারায়ণ পাল বলেন, সুলতান সিকান্দার শাহ কর্তৃক নির্মীত আদিনা মসজিদ বাংলার স্থাপত্য কলার একটি অন্যতম নিদর্শন। বরাবারই নিদর্শনটিকে ঘিরে পর্যটকদের উৎসাহ রয়েছে। এখানে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক আসেন। এটিকে ঘিরে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এজন্য বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। তাই আদিনায় পর্যটকদের সুবিধার জন্য পার্কিংলট তৈরি, শৌচগারগুলি আধুনিকীকরণ, নতুন বসার জায়গার ব্যবস্থা করা সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, এসব করা হলে পর্যটকদের এখানে এসে যে সমস্যাগুলি মুখে পড়তে হয় তা লাঘব হবে। এছাড়াও আমরা এই সৌধটির ইতিহাস আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লিখব। তাহলে পর্যটকরা এসে এর ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আদিনা সৌধের বাগান পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা শ্যাম সিংহ বলেন, শীতের মরশুমে আমরা প্রচুর পর্যটক পাই। প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকেই আদিনার প্রাচীন সৌধে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। এখানকার প্রাচীন সৌধ এবং বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলই পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
পুরাতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩৬৪-১৩৭৪ খ্রিস্টাব্দে সুলতান সিকান্দার শাহ আদিনায় জামা মসজিদ নির্মাণ করেন। যা বাংলা তো বটেই গৌড়বঙ্গের ঐতিহাসিক স্থাপত্যকলার নিদর্শন বহন করে আসছে। খিলান সমৃদ্ধ গম্বুজাকৃতি এবং খোদাই করা পাথরই আদিনা মসজিদ প্রাচীন স্থাপত্য কীর্তি বহন করে আসছে। পর্যটকদের জন্য সকাল থেকেই সৌধটি খোলা থাকে। পুরাতত্ত্ব বিভাগের দেখভালে থাকা প্রাচীন সৌধটির পরিকাঠামো বৃদ্ধি করা হলে এটিকে ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা গড়ে উঠবে। পুরাতত্ত্ব বিভাগ সেই লক্ষ্যে পর্যটকদের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে আদিনার পরিকাঠামো বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়েছে। তাদের নেওয়া এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আরও পর্যটকদের সমাগম হবে। এতে একদিকে পুরাতত্ত্ব বিভাগের আয় যেমন বাড়বে তেমনি এলাকায় হোম স্টে’র সম্ভাবনার গড়ে উঠতে পারে। পর্যটকদের আনাগোনায় এলাকায় ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনাও রয়েছে। আদিনা সৌধকে সামনে রেখে আদিনা ডিয়ার পার্ক এবং নির্মীয়মাণ আদিনা ইকোপার্ক ঘিরে আগামী দিনে পর্যটনের সম্ভাবনা গড়ে উঠতে পারে।
আদিনা সৌধের ভেতরে একটি বৃহৎ প্রার্থনা স্থল রয়েছে। তার চারিদিকে খিলান সমৃদ্ধ গম্বুজাকৃতি একটি পথ রয়েছে। এটি পর্যটকদের আকর্ষিত করে। আদিনা সৌধের ভেতরে পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে ইমামের জন্য একটি উচ্চ পীঠ। তাছাড়াও অছে বাদশাহ-কি-তখকত নামক একটি রাজ আসন। সেটি সুলতান এবং তাঁর পরিবারের মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। আদিনা সৌধের ভেতরে যে পাথরগুলি আছে সেগুলি প্রচীন স্থাপত্যের কীর্তি বহন করে আসছে। ঐতিহাসিক এই প্রাচীন সৌধটি ইতিহাসের নানা কথার সাক্ষী আজও বহন করে আসছে। এটিকে ঘিরে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও সেভাবে প্রচার না থাকায় দেশি বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় পাকাপাকিভাবে স্থান করে উঠতে পারেনি। যাতে এখানে আসা পর্যটকরা তাদের গাড়ি পার্কিং করতে পারেন সেজন্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ সৌধের ভিতরে নির্দিষ্ট পার্কিংজোন বানানোর চিন্তাভাবনা করেছে। পর্যটকদের জন্য ক্যাফেটেরিয়া, পানীয় জলের জন্য স্বংয়ক্রিয় ঠান্ডা ও সাধারণ জল বেরনোর জন্য মেশিন বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এছাড়াও আয় বাড়াতে আদিনা সৌধে ঢোকার জন্য আগামী দিনে টিকিট চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।