কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
রাজ্যের পাঠানো রিপোর্টের উপর কেন্দ্রীয় সরকার যে চোখ বুজে ভরসা করছে না, তার ইঙ্গিত এহেন পদক্ষেপেই পাওয়া যাচ্ছে। সেই কারণেই এবার সরাসরি ঘটনাস্থলে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পারফরম্যান্স খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে মোদি সরকার। প্রকল্পগুলিতে নজরদারির পাশাপাশি যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করবে ১৫ অফিসারের সেই টিম। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি হবে রিপোর্ট। যা কেন্দ্রীয় সচিবলালয় তথা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও জমা পড়বে বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রের নীতি তৈরির লক্ষ্যে সরকারি প্রশিক্ষণের নামে রাজ্যে অফিসার পাঠানো হলেও, বিষয়টি নিয়ে ফের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও মোদি সরকারের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পারফরম্যান্সে বিভিন্ন রাজ্যে সরকারের পাঠানো রিপোর্টে অনেক সময়ই গোঁজামিলের অভিযোগ আসে। কেন্দ্র যে অর্থ পাঠায়, তা অনেক সময়ই নির্দিষ্ট খাতে খরচ না হয়ে অন্যত্র কাজে লাগানো হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। দেখা হবে, একই লোককে বার বার কাজ দিয়েই কি শ্রমদিবসের রেকর্ড হচ্ছে? নাকি যাঁরা কাজ চান, তাঁদেরই দেওয়া হয়? তাই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ চাক্ষুষ করতে রাজ্যে অনুসন্ধানী অফিসার পাঠানো হচ্ছে। আর শুধু তো পশ্চিমবঙ্গে নয়! গোটা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সব মিলিয়ে ৭৫ জন অফিসারকে পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। আর ওই অফিসাররা রাজ্যে যাচ্ছেন ১২ সপ্তাহের বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য। নয়াদিল্লির ইনস্টিটিউট অব সেক্রেটারিয়েট ট্রেনিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের এই কর্মসূচিতে প্রথম সপ্তাহে ক্লাসরুমে বলে দেওয়া হয়, রাজ্যে গিয়ে কী কী করতে হবে। তারপর দশ সপ্তাহ রাজ্যে সফর। শেষে এক সপ্তাহ দিল্লিতে ফিরে ‘ডি ব্রিফিং।’ অর্থাৎ আপাত দৃষ্টিতে প্রশিক্ষণ পর্ব ছাড়া কিছুই নয়। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে রাজ্যে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রিপোর্ট কেন অফিসাররা তৈরি করবেন? রাজ্যকে চেপে ধরতে এটাই মুখ্য উদ্দেশ্য নয় তো?
সরকারি সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, রাজ্যের কোন প্রকল্প জনপ্রিয়, কোন প্রকল্পের রূপায়ণ কীভাবে হচ্ছে, তাও নজর রাখবেন সংশ্লিষ্ট অফিসাররা। জনস্বার্থে কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ নীতি তৈরির লক্ষ্যেই অফিসারদের এই ‘টাস্ক’ দেওয়া হয়েছে বলেই যুক্তি সরকারের। তবে প্রশিক্ষণের আড়ালে রাজ্যে চলা প্রকল্পের উপর নজরদারি এবং রূপায়ণ প্রসঙ্গে তথ্য সংগ্রহের বিষয়টিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষত, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যে। যেখানে ১০০ দিনের কাজে বেশ কয়েক বছর ধরে সবচেয়ে বেশি শ্রমদিবসের রেকর্ড বাংলারই রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে কৃষিতে সাফল্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও।