কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
নির্ভয়া কাণ্ডের জেরে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। এরপর মহিলাদের উপর ধর্ষণ বা শারীরিক নিপীড়নের ঘটনা রুখতে, একাধিক কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমনকী শিশুদের উপর যৌন নিপীড়নের ঘটনাতেও কড়া আইন আনা হয়েছে। অভিযুক্তরা যেন রেহাই না পায়, সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে আরও একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। বিগত বছরে মোদি সরকার অর্ডিন্যান্স জারি করে জানিয়েছিল, ধর্ষণের মতো ঘটনার তদন্তের কাজ ৬০ দিনের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে শেষ করতে হবে। এই সময় পেরিয়ে গেলে চার্জশিট বা ফাইনাল রিপোর্ট জমা দেওয়া যাবে না। সংসদেও পাশ হয়ে গিয়েছে এই অর্ডিন্যান্স। এই কপি সব রাজ্যের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কী কী করণীয়, সেই গাইডলাইনও বেঁধে দিয়েছে তারা।
রাজ্যগুলি তা আদৌ মেনে চলছে কি না, তার উপর নজরদারি চালায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই নজরদারি চালাতে গিয়েই দপ্তরের কর্তাদের নজরে আসে, যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার মধ্যে মাত্র ৩৭ শতাংশ তদন্ত নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শেষ হয়েছে। যা অত্যন্ত হতাশজনক। অধিকাংশ রাজ্যই সেই সময়সীমার মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারছে না। এরাজ্যও তার বাইরে নয় বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, ২০১৮ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৮ জুন পর্যন্ত বাংলায় ধর্ষণের এফআইআর হয়েছে ৪০৯টি। কিন্তু একটির তদন্তও ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করে চার্জশিট জমা করা যায়নি। এরপরেই রয়েছে কর্ণাটক। সেখানে এই সময়কালে ১৯৭টি এফআইআর হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে কোনও তদন্তই শেষ করতে পারেনি সেখানকার পুলিস। এই তালিকায় অরুণাচল প্রদেশ, গোয়া, মেঘালয়, পুদুচেরি সহ আরও কয়েকটি রাজ্য রয়েছে। দিল্লির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশে মোট এফআইআরের ৭৩ শতাংশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই চার্জশিট হয়ে গিয়েছে। শুরু হয়েছে বিচার প্রক্রিয়া। এমনকী বেশ কিছু ধর্ষণের ঘটনায় সাজা পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। ওই রাজ্যগুলি এমন মামলার তদন্ত হাল্কাভাবে নেওয়ায় দিল্লির কর্তারা রীতিমতো বিরক্ত। কেন দেরি হচ্ছে, তা জানতে কৈফিয়ৎ তলব করার কথাও ভাবছে কেন্দ্র।
রাজ্যগুলি যাতে ধর্ষণের ঘটনার তদন্তকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, তা নিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে ওই রাজ্যগুলিকে। এরপরই নড়েচড়ে বসেছেন এরাজ্যের পুলিস কর্তারা। কোন কোন জেলায় ধর্ষণের ঘটনায় কত এফআইআর হয়েছে, তার মধ্যে কত শতাংশের ক্ষেত্রে চার্জশিট জমা পড়েছে, তদন্ত কী পর্যায়ে রয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। কর্তাদের নজরে এসেছে, অনেক ক্ষেত্রে ফরেনসিক ও বিশেষজ্ঞের রিপোর্ট না আসাতেই তদন্তের কাজ আটকে গিয়েছে মাঝপথে। এক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও গাফিলতি নেই। পাশাপাশি জেলাগুলির কাছে কড়া নির্দেশ গিয়েছে, যেনতেন প্রকারেণ ৬০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত শেষ করে ফেলতে হবে। যদি তা না হয়, তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে শুরু করে অন্যান্য রিপোর্ট যাতে দ্রুত পাওয়া যায়, তারজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।