কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নির্দেশ, বিজেপি যদি এরপরেও কোনও সময় সভা তথা যাত্রা কর্মসূচি নিতে চায়, তাহলে নতুন করে ফের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে প্রস্তাব জমা দিতে পারে। রাজ্য সব দিকে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে। তবে এই মুহূর্তে রাজ্য সরকার বিজেপির সম্ভাব্য যাত্রাকে ঘিরে যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা মোটেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউলকে পাশে রেখে আজ এই মন্তব্য করেন দেশের প্রধান বিচারপতি।
চেতনা যাত্রার নাম করে পশ্চিমবঙ্গের চারটি জায়গা থেকে বিজেপির ‘রথ’ বের হলে কেবল ট্রাফিক সমস্যাই নয়, শান্তিও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা। নষ্ট হতে পারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও। স্পর্শকাতর এলাকা দিয়ে কম করে দেড় থেকে দু’হাজার লোকের জমায়েত সহ এই রথ এগলে বাড়তে পারে উত্তেজনা। রাজ্য গোয়েন্দাদের সেরকমই রিপোর্ট। তাছাড়া সামনেই সাধারণতন্ত্র দিবস। তাই কোনওভাবেই ব্যবস্থা করা যাবে না বাড়তি পুলিসের। তাই অনুমোদন বাতিল হল। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দেবশ্রী চৌধুরীকেও চার পাতার এই রিপোর্ট দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্রদপ্তরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি এবং এক্স অফিসিও যুগ্ম সচিব পি রাহা।
মামলার শুনানিতে এই রিপোর্টকে অমূলক আশঙ্কা দাবি করে বিজেপির হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে দেশের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি বলেন, সচিব পর্যায়ের ওই অফিসারের আশঙ্কামূলক রিপোর্ট মনগড়া। বিজেপি একটি দায়িত্ববান রাজনৈতিক দল। রথযাত্রার কর্মসূচিতে বিজেপি গোলমাল করবে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হবে, এসব আগে থেকে ভেবে বসা অমূলক। তাছাড়া আগে যেখানে ৩০ দিন যাত্রার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, তা কমিয়ে এখন ২০ দিন করা হয়েছে। তাতেও অনুমতি দিচ্ছে না রাজ্য। তাহলে পশ্চিমবঙ্গে কি বিরোধী রাজনৈতিক দলের মিটিং মিছিল রথযাত্রা করার কোনও অধিকার নেই?
পাল্টা জবাব দেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। সরকারি রিপোর্টকে হাতিয়ার করে আদালতে তিনি বলেন, সভা করার ক্ষেত্রে তো কোনও বাধা নেই। করুন না। ছোট বড় কত সভা কোথায় করতে চায় বিজেপি বলুক। সিংভি বলেন, ২০১৭ সালে গোটা রাজ্যে বিজেপি একা ১৫৮৪টি মিটিং মিছিল করেছে। গত বছর ২৮৫৯টি। অনুমতি কি দেওয়া হয়নি? তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাজনাথ সিং, অমিত শাহর মতো জেড প্লাস নিরাপত্তা পাওয়া ব্যক্তিত্বদের নিয়ে ৫০ হাজার বা তার চেয়ে বেশি লোকের সভা করার প্রস্তাব এলে রাজ্য সরকারের অনুমতি না দেওয়ার কিছু নেই। তবে রথযাত্রার নামে যে কর্মসূচির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার অনুমোদন দেওয়া যায় না। অনুমোদন না দেওয়ার পক্ষে কারণ দেখাতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ, নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং উত্তর দিনাজপুরের বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীর উস্কানিমূলক বক্তব্যের অংশ বিশেষকেও হাতিয়ার করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মামলার শুনানিতে বিষয়টির উল্লেখ করার পাশাপাশি ১৯৯০ সালে বিজেপি’র রথযাত্রার প্রসঙ্গ টেনেছে মমতার সরকার। আদালতে সিংভি বলেন, সেই সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ১৩ জন মারা গিয়েছিল। ফলে পূর্ব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি রাজ্য পুলিসের দাঙ্গার আশঙ্কা সংক্রান্ত রিপোর্ট দেখেই রথযাত্রায় অনুমোদন দেওয়া হয়নি। নবান্নের বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে প্রধান বিচারপতিও জানিয়ে দেন, আপাতত যাত্রা বাতিল।