নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ছ’দিন আগে ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানার ঘুঁটিয়ারি শরিফ হাসপাতাল রোডে বোমা ফেটে মারাত্মক জখম হয় তিন শিশু। তার মধ্যে রবিবার জুলফিকার লাইক (৬) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পুলিস জানিয়েছে, ওই ঘটনায় জুলফিকারের একটি হাতের অনেকটা উড়ে গিয়েছিল। চোখেরও ক্ষতি হয়। এদিন সকালে সে মারা যায়। চিকিৎসাধীন দু’জনের অবস্থাও ভালো নয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃত শিশুর বাড়ি জীবনতলার হোমরাতে। কাগজ কুড়োনির কাজ করত সে। সেই সূত্রে ঘুঁটিয়ারি শরিফে ভাড়া বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে থাকত। কাগজ কুড়ানোর সময় বোমাগুলি দেখে হাত দিতেই তা ফেটে গিয়ে মারাত্মক জখম হয় জুলফিকার। ছেলের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এদিন মৃতের বাবা ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, রেজ্জাক তৃণমূল করে। সেই ক্ষমতা দেখিয়ে এলাকায় মানুষের উপর অত্যাচার চালায়। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। আমার ছেলেটা এভাবে মারা গেল, সে ব্যাপারে কেউ এগিয়ে এল না।
এদিকে, ওই ঘটনায় ধৃত রেজ্জাক লস্করকে জেরা করে পুলিস জানতে পেরেছে, শাসকদলের স্থানীয় এক নেতার অনুগত সে। তার হয়ে কাজ করে। একটি জায়গাতে গোলমাল পাকানোর জন্য ওই বোমা তৈরি করা হয়েছিল। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ধৃতের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে এদিন দাবি করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘুঁটিয়ারি শরিফে শাসকদলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। তারই একটি গোষ্ঠীর এক নেতার আশীর্বাদের হাত মাথায় ছিল বোমা তৈরির কারিগর রেজ্জাকের উপর। পাল্টা গোষ্ঠীর উপর হামলা করার জন্য ওই বোমা মজুত করা হয়েছিল। তা সরিয়ে ফেলার আগেই বাচ্চারা সেখানে গিয়ে তাতে হাত দেওয়াতে এত বড় ঘটনা ঘটে যায়। অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস এখন বোমা শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ওই দলের লোকজন যেখানে সেখানে অস্ত্র ও বোমার কারখানা তৈরি করছে। কোথাও কোনও আইনশৃঙ্খলা নেই। তার জেরে নিরীহ শিশুদের প্রাণ যাচ্ছে।