বিদ্যার্থীদের পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
দিনহাটা শহরের জ্ঞানদাদেবী গার্লস স্কুলের ছাত্রী অঞ্জনার পরীক্ষার সেন্টার পড়েছে শহরের গোপালনগর মহেশ সাহা শরণার্থী উচ্চ বিদ্যালয়ে। মায়ের সঙ্গে নিয়মিত টোটো করে পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে সে পরীক্ষা দিচ্ছে। অন্যান্য পরীক্ষার মতো। অঙ্ক পরীক্ষাও তার ভালোই হয়েছে বলে সোমবার জানায় অঞ্জনা।
দিনহাটা গোপালনগর হাইস্কুলের ভেনু সুপারভাইজার সত্যজিৎ কার্জি, শিক্ষক শঙ্খনাদ আচার্য বলেন, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও মনের জোরে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে মেয়েটি। পর্ষদের নির্দেশ ও নিয়ম মেনে আমরা ওর পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি। মেয়েটির পরীক্ষা দিতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেজন্য লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
অঞ্জনার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের ১৫ দিন পরে জন্ডিসে আক্রান্ত হয় অঞ্জনা। প্রথমে ওর পরিবারের লোকজন সেটা বুঝতে পারেননি। বয়স বছর দু’য়েক হওয়ার পর মেয়ে হাঁটাচলা না করায় ওর বাবা-মায়ের সন্দেহ হয়। ওকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কোচবিহার, কলকাতার পর অঞ্জনাকে চিকিৎসার জন্য ভেলোরেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেকেটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল। সেসময় সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, ছোট বেলায় জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ায় অঞ্জনার শরীরের দু’টি নার্ভ শুকিয়ে গিয়েছে। এখন কিছু করা যাবে না। চিকিৎসকদের কথা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে দেবনাথ দম্পতির। অঞ্জনার পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও তার একটি ছোট ভাই রয়েছে। বাবা অনুপ দেবনাথ গ্রিলের দোকানের কর্মচারী। মা রিনা দেবনাথ গৃহবধূ। কোনওরকমে তাদের দিন চলে। সরকারি সাহায্য বলতে মাসে ১০০০ টাকার একটি সরকারি ভাতা পায় অঞ্জনা।
অঞ্জনার মা রিনাদেবী বলেন, মেয়ে পড়াশুনা করে শিক্ষিকা হতে চায়। আমরা গরিব মানুষ। স্বামী গ্রিলের দোকানে কাজ করে। কোনওরকমে সংসার চলে। সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পেলে অঞ্জনার পড়াশুনার জন্য খুব ভালো হতো। অঞ্জনার বাবা অনুপ দেবনাথ বলেন, অভাবের সংসারে কোনওরকমে সংসার চলে। মেয়ের নানান সমস্যা রয়েছে। তার উপর মেয়ে পড়াশুনা করে শিক্ষিকা হতে চায়। ওর শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্নকে অভাবের মধ্য দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করছি। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে ভালো হয়।