কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে রাস্তার ধারেই পর পর তিনটি বাড়ি। প্রদীপ মণ্ডল, সুকান্ত মণ্ডল এবং দেবদাস মণ্ডলের। তিনজনই জেঠতুত-খুড়তুত ভাই। শনিবার রাতেই প্রদীপ ও সুকান্তের মৃতদেহ পেয়েছে পুলিস। কিন্তু, দেবদাসের কোনও হদিশ পায়নি। পরিবারের লোকজনেরা গভীর উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। প্রদীপবাবুর দুই ছেলে। বড় ছেলে প্রীতম নবম শ্রেণীতে পড়ে। ছোট ছেলে অনুভব সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। স্ত্রী পদ্মাদেবী গৃহবধূ। বাড়িতে কান্নার রোল। প্রদীপবাবুর দোকানের সামনে মাছের হ্যাচারি ভেঙে তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে হামলকারীরা। বাড়ির সামনেই প্রদীপবাবুর দোকান।
তাঁর দাদা সুকুমার মণ্ডল বলেন, শনিবার বিকালে ভাই শ্বশুরবাড়ি থেকে সবেমাত্র ফিরেছিল। আক্রমণ হওয়ার পর প্রাণে বাঁচার জন্য ভেড়ির দিকে দৌড়েছিল। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। ওর চোখে গুলি করে খুন করেছে তৃণমূলের লোকজন। আমি কোনওরকমে বাড়ির ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতে পেরেছিলাম। তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। পরিকল্পনা করেই হামলা করেছিল ওরা।
প্রদীপবাবুর বাড়ির গা ঘেঁষে সুকান্ত মণ্ডলের বাড়ি। তাঁর বাড়িতে যাওয়ার মাঝখানেই পড়ে রয়েছে চাপ চাপ রক্ত। গ্রামবাসীরা বলেন, এখানে কোপ মারা হয়। তারপর ভেড়ির দিকে নিয়ে গিয়ে সুকান্তকেও গুলি করে খুন করে তারা। সুকান্ত অবিবাহিত। সুকান্তর বাড়ির পাশেই দেবদাস মণ্ডলের বাড়ি। দেবদাসবাবুর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে সুদীপ্ত তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। মেয়ে ঝুমা দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। স্ত্রী সুপ্রিয়াদেবী গৃহবধূ। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ওকে মারতে মারতে তৃণমূলের লোকজন তুলে নিয়ে গেল। আর ফিরল না। জানি না ওকে কী করেছে। আমার স্বামী জীবিত না মৃত বলতে পারবেন?
ভাঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ি গ্রাম। সেখানেও মৃত তৃণমূল কর্মী কায়ুম মোল্লার বাড়িতে শোকের ছায়া। মাত্র মাস চারেক আগেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর। কায়ুমকেও গুলি করে এবং কুপিয়ে খুন করেছে বিজেপি। স্বামীর মৃত্যুতে শোকাহত স্ত্রী জেম্মুনেসা বিবি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বার বার বিড়বিড় বলছিলেন, আমার সুখের সংসার শেষ হয়ে গেল।