প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। তবে তা বাস্তবায়িত হওয়াতে সমস্যা আছে। ... বিশদ
আমন ধানের জমিতে ধানের সঙ্গেই বাড়বে কই, শিঙ্গি, মাগুর, রুই-কাতলা সহ নানা প্রজাতির মাছের উৎপাদন। পাশাপাশি ধানের আলে মাচা করে লাউ, কুমড়ো ও সব্জি চাষও করা যাবে। আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে এই মিশ্র চাষ করা হবে। এই মিশ্র চাষের প্রতি চাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে ব্লক কৃষিদপ্তর থেকে। চাষিরাও বেশি মুনাফার আশায় মিশ্র চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
ব্লক কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের সাহায্যে যে সব জমিতে ধান রোপণ করা হয়, সেই সব জমিতে মিশ্র চাষ করা যাবে।
ধান গাছের চারা বীজতলা থেকে ৩৫ দিনের মাথায় মূল জমিতে রোপণ করতে হবে। অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে ধান রোপণ করলে জমিতে জল দাঁড়াতে পারে না। জমির চারদিকে আল কেটে গর্ত করে নালা তৈরি করা হয়। নালার পাশে আমন ধান রোয়া হয়। তারপর সেই ধানের জমিতে শিঙ্গি ও মাগুর মাছের চারা ছাড়া হয়। ধানের জমিতে জল শুকিয়ে গেলে পাশের নালায় মাছ ফিরে আসে। এই ধানের জমিতে কোনও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয় না। মাছ ধানগাছের পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। তাই জমিতে কোনও কীটনাশকও প্রয়োগ করতে হয় না। এছাড়াও জমিতে ক্যাট ফিশ ছাড়া হয়। তারা ধানের জমির আবর্জনা খেয়ে ধানকে রোগপোকার হাত থেকে রক্ষা করে।
১ বিঘা জমি ১৩৩৩ বর্গ মিটারের সমান। প্রতি বর্গ মিটার জমিতে একটি মাগুর চারা ছাড়া হয়। তাই এক বিঘা জমিতে ১৩৩৩টি মাগুর চারা ছাড়া হয়। প্রতিটি চারার ওজন ৫ গ্রাম হলে প্রায় ৭ কেজি মাগুর চারা ছাড়া হয় প্রতি বিঘা জমিতে। প্রতিটি মাগুর চারার দাম ৩ টাকা হলে মোট চারার দাম পড়ে ৩৯৯৯ টাকা। ১২০ দিনের জন্য মাছের খাবার লাগে প্রায় ১৫৩ কেজি। সেই বাবদ ১৮৩৬০ টাকা খরচ হয়। সেই সঙ্গে অন্যান্য ওষুধ লাগে ৪০০ টাকার। মাছের চারা, খাবার ও ওষুধ নিয়ে মোট খরচ হয় প্রায় ২৩ হাজার টাকা। ধান ১৫০ দিনের মাথায় পেকে যায়। তার আগে মাছ তুলে নেওয়া হয়। ১২০ দিনে প্রতিটি মাছের ওজন হয় ৫০-৭৫ গ্রাম।
প্রতিটি মাছের গড় ওজন ৬০ গ্রাম হলে মোট ওজন হয় প্রায় ৮০ কেজি। প্রতি কেজিতে ৭০০ টাকা দাম মিললে মোট মাছের দাম পাওয়া যাবে প্রায় ৫৬ হাজার টাকা। মাছ চাষে মোট খরচ হয় ২৩০০০ টাকা। তাহলে লাভ হয় প্রায় ৩৪ হাজার টাকা। মিশ্র চাষ করে একজন চাষি আমন ধান ও মাছ চাষে সব মিলিয়ে ৪৪ হাজার টাকা লাভ করতে পারেন এক বিঘা জমিতে। যেখানে প্রথাগতভাবে ধান চাষ করে মাত্র ৫ হাজার টাকা লাভ হয়। তাই ব্লকের চাষিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিশ্র চাষের প্রতি ঝুঁকছেন।
ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা কিঙ্কর দে তরফদার বলেন, মিশ্র পদ্ধতিতে একজন চাষি একই জমিতে ধান, মাছ ও সব্জি একসঙ্গে চাষ করে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। সেই সঙ্গে সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে চাষ করা হয় বলে তা খাদ্য হিসেবেও স্বাস্থ্যসম্মত।