সংবাদদাতা: বোরো ধান চাষে সেচের জল মিলবে কোথা থেকে? সেই চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিদের। জেলার ডায়মন্ডহারবার ১ ও ২, মগরাহাট ১ও ২, ফলতা, জয়নগর ১ ও ২, বারুইপুর, মন্দিরবাজার ও কুলপি ব্লকে ভূগর্ভের অনেকটা নীচে রয়েছে জলস্তর। ফলে রবিশস্য চাষের ক্ষেত্রেও এসব অঞ্চলের চাষিদের ভরসা ডায়মন্ডহারবার খাল এবং তার শাখাপ্রশাখার জল। সেই জলকে কাজে লাগিয়েই কিছু চাষি বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য, খালে খুব বেশি জল নেই। ফলে ওই জলে চাষ করে কীভাবে বোরো ধান ঘরে তোলা সম্ভব হবে, তা নিয়েই উদ্বেগ বাড়ছে চাষিদের মধ্যে। বারুইপুর ব্লকের শিখরবালি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষি অজিতকুমার হালদার বলছিলেন, তিনি তাঁর ১০ বিঘা জমিতে প্রতীক্ষা জাতের বোরো ধান চাষ করবেন। সেইমতো বীজতলা করেছেন। বারুইপুর খাল থেকে জল নিয়ে তিনি চাষের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু জমি তৈরি করার জন্য ওই খাল থেকে জল নিতে গিয়ে দেখেন, তাঁদের ব্লকেরই নবগ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু চাষি খালের ধারে জড়ো হয়েছেন। জানা যায়, পাম্প সেট বসিয়ে তেউরহাট অঞ্চলে খালের জল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নবগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের বক্তব্য, জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের ঢোলা চন্দনেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেক কৃষক এসে ওই খাল থেকে জল নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, ঢোলা এলাকায় রয়েছে হড়কা খাল। তার পরও কেন তাঁরা এই খাল থেকে জল নিচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অন্য এলাকার কৃষকরা। মগরাহাট ২ নম্বর ব্লকের গোকর্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষি রাম মণ্ডল ও সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, মগরাহাট খালের সামান্য জলে তাঁদের লিজে নেওয়া ১২ বিঘা জমিতে হাইব্রিড ৮০২ প্রজাতির বোরো ধান চাষ শুরু করেছেন। এখন বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। কিন্তু এই খাল থেকে পাশের দক্ষিণ ধামুয়ার চাষিরাও জল নিতে আসছেন। ফলে দুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের মধ্যে রোজই খালের জল নেওয়া নিয়ে বচসা চলছে। তাঁদের বক্তব্য, সেচ দপ্তর ডায়মন্ডহারবার খালে গঙ্গার জল পাঠানোর ব্যবস্থা করুক। তা না হলে বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাবে জলের অভাবে। মগরাহাট ১ নম্বর ব্লকের উস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষি গণেশ মণ্ডল ও সইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাঁদের এলাকায় ডায়মন্ডহারবার খালের জল ভালোই আছে। কিন্তু প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার চাষিরা দল বেঁধে এসে পাম্প সেট বসিয়ে তাঁদের জমিতে জল নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার খাল থেকে জল নিয়ে গিয়ে নিজেদের এলাকার পুকুরে জমিয়ে রাখছেন।