কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
কলকাতায় এসে নিউ আলিপুর কলেজে ভর্তি হলাম। একাত্ম হয়ে পড়লাম ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে। আটের দশকের মাঝামাঝি। বাংলায় তখন বামেদের রমরমা। স্রোতের বিপরীতে হেঁটে কংগ্রেসের হয়ে ছাত্র রাজনীতি করেছি। কেউ এক ইঞ্চি জমি ছাড়েনি। লড়াইয়ের মাধ্যমে অর্জন করে নিতে হয়েছে। এই লড়াই শিখেছিলাম তৎকালীন কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই। রাজনীতি করার সময়েও মাঠের যাওয়ার নেশা কমেনি। তখনও নিয়মিত মাঠে গিয়ে লাইন দিয়ে টিকিট কেটে খেলা দেখেছি। আবার কলেজের ক্লাস কিংবা ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচির জন্য বন্ধুদের নিয়ে মোহন বাগান মাঠে পৌঁছতে দেরি হয়েছে। তখন র্যামপার্টে দাঁড়িয়েই খেলার স্বাদ চেখেছি। নিয়মিত মোহন বাগান মাঠে যাতায়াতের জন্যই সমর্থকমহলে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলাম। ২০০০ সালে নিউ আলিপুর অঞ্চলে পুরপিতা হওয়ার পর প্রাক্তন ক্রিকেটার দাত্তু ফাদকরের নামে একটি পার্কের নামকরণ করেছিলাম। কারণ ওই অঞ্চলেই থাকতেন তিনি। পুরপিতা হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার ফলে ২০০৫ সালে মোহন বাগানের ঐতিহাসিক নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগ এসে যায়। সেবার দুই পক্ষের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও টুটু বসু- অঞ্জন মিত্র গোষ্ঠীর প্যানেলে তৃতীয় সর্বাধিক ভোট পেয়েছিলাম। পরবর্তীকালে দু’টি ভিন্ন টার্মে মোহন বাগানের সহ-সভাপতি হয়েছিলাম। গত পাঁচ বছর আমি ক্রীড়ামন্ত্রী। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ওই দায়িত্ব দেওয়ার পর মোহন বাগান প্রশাসন থেকে নিজেকে পুরোপুরি সরিয়ে নিয়েছি। এমনকী লিগের খেলা দেখতে মাঠেও যাই না। এখন যুবভারতীতে ডার্বি হলেই আলাদা টেনশন হয়। ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য সল্টলেক স্টেডিয়ামের ভোল পাল্টে গিয়েছে। কৃতিত্ব অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর। সোয়া তিন বছর পরও ঝাঁ-চকচকে যুবভারতী। দুই প্রধানের সমর্থকদের কাছে অনুরোধ, রবিবার ফল যাই হোক না কেন, ম্যাচ যেন শান্তিতে শেষ হয়। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন রক্ষার দায়িত্ব ফুটবলপ্রেমীদেরই।
ডার্বির সেরা স্মৃতি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান? সেক্ষেত্রে ১৯৮৪ সালে কলকাতা লিগে দুই প্রধানের বড় ম্যাচের কথাই বলতে হয়। ইডেনে আয়োজিত শেষ ডার্বি ছিল সেটা। সেই ম্যাচে বাবু মানির গোলে জিতেছিল মোহন বাগান। ঐতিহাসিক ম্যাচে জেতার পর মোহন জনতার কাঁধে চেপে খেলোয়াড়রা ফিরেছিলেন তাঁবুতে। সমর্থকদের সেই স্রোতে ছিলাম আমিও। তবে সময়ের স্রোতে এবং ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়ার পর নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমি এখন কোনও দলেরই সমর্থক নই। তিন প্রধানই আমায় আজীবন সদস্যপদ দিয়েছে। রাজ্যের ফুটবলের উন্নতিতে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে চাই। কারণ, আমার হৃদয়ে এখন শুধুই বাংলা।