শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
নাগপুর, ১০ নভেম্বর: রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩০ রানে হারিয়ে টি-২০ সিরিজ জিতে নিল ‘টিম ইন্ডিয়া’। হ্যাটট্রিকসহ সাত রানে ৬টি উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়লেন পেসার দীপক চাহার। ম্যাচের সেরাও হলেন তিনি। নজর কাড়লেন নবাগত পেস অলরাউন্ডার শিবম দুবেও। কঠিন সময়ে তিনি তুলে নিয়েছেন তিনটি মূল্যবান উইকেট। ঝলসে উঠেছিল তরুণ শ্রেয়াস আয়ারের ব্যাটও। রহিত, ধাওয়ানদের ব্যর্থতার দিনে জামতা স্টেডিয়ামে যেন তারুণ্যের জয়ধ্বজা উড়ল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
জয়ের জন্য ১৭৫ রান তুলতে নেমে বাংলাদেশ ১২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতে চাপে পড়ে গিয়েছিল। দীপক চাহার পরপর তুলে নেন লিটন দাস (৯) ও সৌম্য সরকারের (০) উইকেট। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, ভারত সহজেই ম্যাচ ও সিরিজ জিতে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের মহম্মদ নায়িম অনবদ্য ব্যাটিং করে ম্যাচের রং দ্রুত বদলে দেন। বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রহিত শর্মা। কঠিন সময়ে তিনি স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু চাহাল পরপর বাউন্ডারি হজম করেন। ভারতের হাত থেকে ম্যাচ ক্রমশ বেরিয়ে যেতে থাকে। তরুণ অলরাউন্ডার শিবম দুবে শুরুতে স্নায়ুর চাপ নিতে পারেননি। তৃতীয় উইকেটে মহম্মদ মিঠুন ও নায়িম ৯৮ রান যোগ করেন। একটা সময় ৪৮ বলে টাইগারদের দরকার ছিল মাত্র ৬৯ রান। টি-২০’তে যা ছিল জলভাত। রহিত শেষ পর্যন্ত দীপক চাহারের হাতেই বল তুলে নেন। ত্রয়োদশ ওভারে অন্তিম ডেলিভারিতে মিঠুন ২৭ রানে আউট হতেই ম্যাচে ফিরে আসার রাস্তা খুঁজে পায় ‘টিম ইন্ডিয়া’। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান দুবে। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই মুশফিকুর রহিমকে (০) বোল্ড করেন তিনি। তরুণ শিবমের গর্জন ভারতীয় সমর্থকদের ফের জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। ১৬তম ওভারে শিবমই বাংলাদেশের মুখের গ্রাস কেড়ে নেন। তৃতীয় ডেলিভারিতে তাঁর ইয়র্কার সামলাতে না পেরে বোল্ড হন নায়িম (৮১)।পরের বলে শিবম ফের তুলে নেন আফিফের (০) উইকেট। মুখে হাসি ফেরে রহিতের। পরের ওভারে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে (৮) আউট করে বাংলাদেশের টুঁটি চেপে ধরেন চাহাল। সেখান থেকে আর ম্যাচে ফেরার কোনও সুযোগ ছিল না টাইগারদের। ১৮তম ওভারের শেষ বলে দীপক চাহার আউট করেন সফিউলকে (৪)। অন্তিম ওভারের প্রথম দু’টি বলে একে একে মুস্তাফিজুর (১) ও আমিনুলকে (০) আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন চাহার। টি-২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে এটাই কোনও বোলারের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স।
ভালো লড়াই করলেও ভারতকে হারিয়ে প্রথমবার সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন এবারও তাদের কাছে অধরা থেকে গেল।
টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। দলের রণকৌশল মাঠে নেমে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের বোলাররা। দ্বিতীয় ওভারেই রহিত শর্মার (৯) উইকেট তুলে নেন সফিউল। প্রতি-আক্রমণেই বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নেন শিখর ধাওয়ান। বেশ কয়েকটি দর্শনীয় শট উপহার দেন তিনি। মনে হচ্ছিল, ‘হিটম্যান’এর ফ্লপ শো ঢেকে দেবেন গব্বর। কিন্তু ১৯ রানে তুলে মারতে গিয়ে সফিউলের বলেই আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন শিখর। শুরুতেই ৩৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। মিডল অর্ডারের উপর তেমন ভরসা ছিল না। অনেকেই ভেবেছিলেন, ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারবে না ‘টিম ইন্ডিয়া’। কিন্তু লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আয়ার তৃতীয় উইকেটে ৫৯ রান যোগ করে পালটা চাপে ফেলে দেন বাংলাদেশকে। তবে শ্রেয়াস শূন্য হাতে সাজঘরে ফিরতেন যদি আমিনুল ক্যাচটা ধরতে পারতেন। আর পিছন ফিরে তাকাননি ভারতের এই তরুণ ব্যাটসম্যানটি। লোকেশ রাহুলও গত দু’টি ম্যাচের ব্যর্থতা পুষিয়ে দিয়েছে দুরন্ত হাফ-সেঞ্চুরিতে। সাতটি বাউন্ডারির সাহয্যে ৩৫ বলে ৫২ রান করে আউট হন রাহুল। তবে ঝোড়ো ব্যাটিং উপহার দেন শ্রেয়াস। পঞ্চদশ ওভারের প্রথম তিনটি বলে ছক্কা হাঁকান তিনি। আন্তর্জাতিক টি-২০’তে প্রথম অর্ধশতরান পূর্ণ করতে তাঁর লেগেছে মাত্র ২৭টি বল। তবে শ্রেয়াসের সঙ্গে ঋষভ পন্থ যদি বড় পার্টনারশিপ গড়তে পারতেন, তাহলে ভারতের রান আরও বেশি হতে পারত। ১৭তম ওভারে পার্টটাইম বোলার হিসাবে সৌম্য সরকার দু’টি মূল্যবান উইকেট তুলে নেন। প্রথমে তিনি ফেরান ঋষভকে (৬)। ভারতীয় উইকেটরক্ষকটি আর চাপে পড়ে গেলেন। ঋষভের ধারাবাহিক ব্যর্থতা দেখে ‘টিম ইন্ডিয়া’র সমর্থকরা ধোনিকে ফিরিয়ে আনার আকুল প্রার্থনা করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।