কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরি অফিসার মনোঞ্জয় রায় বলেন, আমাদের জেলা গ্রন্থাগার সহ ১৯টি টাউন ও মডেল গ্রন্থাগারে দু’টি করে কম্পিউটার রাজ্য থেকে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আশা কারি বাকি গ্রন্থাগারেও কম্পিউটার আসবে। এসব গ্রন্থাগারে পাঠকেরা ডিজিটাল পরিষেবা পাবেন। কম্পিউটার টেবিলে বসে তাঁরা নিজেদের পছন্দের বই খুঁজে নিতে পারবেন। একটি করে প্রিন্টারও দেওয়া হয়েছে। চাইলে পাঠকরা তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। ইন্টারনেটও ওই কম্পিউটারে যুক্ত থাকবে। যেহেতু গ্রন্থাগারকে ডিজিটাল করা হয়েছে তাই গ্রন্থাগারিকদের কম্পিউটার চালানোর বিষয়ে একটি বেসরকারি সংস্থা প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তারাই মেশিনগুলি দেখভাল করবে। গ্রন্থাগারগুলিতে কর্মী সংকট রয়েছে। আমারা সেটা দপ্তরকে জানিয়েছি। আশা করি, সরকার এবিষেয় দ্রুত কোনও উদ্যোগ নেবে।
পশ্চিমবঙ্গ সাধারণের গ্রন্থাগার কর্মী সমিতির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সম্পাদক দজিমুদ্দিন মিঁয়া বলেন, জেলার গ্রন্থাগারগুলিকে সচল করতে সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু গ্রন্থাগারে কম্পিউটার এসেছে। কিন্তু মনে হয় গ্রন্থাগারগুলিতে কর্মী সংকট মেটানো দরকার। কর্মী নিয়োগ হলে প্রচুর বেকার ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে। পর্যাপ্ত আলমারির অভাবে প্রচুর বই সাজিয়ে রাখা যাচ্ছে না। এসব দিকেও সরকারকে নজর দেওয়া দরকার।
হরিরামপুর গ্রামীণ লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক বিশ্বজিৎ মিশ্র বলেন, সরকার গ্রন্থাগারগুলিকে ডিজিটাল পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত করলেও তা সম্ভব নয় যতদিন পর্যন্ত কর্মী সংকট না মিটছে। একজন গ্রন্থাগারিককে অতিরিক্ত হিসেবে দু’টি করে গ্রন্থাগারের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তাছাড়াও গ্রুপ ডি কর্মীর অভাব আছে। বই সাজিয়ে রাখার জন্য পর্যাপ্ত আলমারি নেই। কিছু গ্রন্থাগার দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় আছে। পাঠকদের পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে না। কম্পিউটারের বিষয়ে গ্রন্থাগারিকদের নামেমাত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থাগারের বইগুলি কোন তাকে কোন রুমে রয়েছে তার জন্য খাতাপত্র রাখা হয়। সেই খাতা নিয়মিত দেখাশুনা করা হয়। কিন্তু বর্তমানে কর্মীর অভাবে অনেক গ্রন্থাগারে এই প্রক্রিয়ায় ভাটা পড়েছে। তাছাড়া খাতার পৃষ্ঠা উল্টে কোন বই গ্রন্থাগারে রয়েছে কোন বই কবে জমা পড়বে তা খুঁজে বের করতে পাঠকদের অসুবিধা হয়। খাতা সকলে ব্যবহার করায় অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই তা ছিঁড়ে যায়। যাবতীয় এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতেই গ্রন্থাগারকে ডিজিটাল করা হচ্ছে। জেলা গ্রান্থাগার বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ১৯টি গ্রন্থাগারকে ওই পরিষেবার অধীনে আনা হচ্ছে সেখানে দু’টি করে কম্পিউটার থাকছে। তাছাড়াও তাতে প্রিন্টার এবং ইন্টারনেট পরিষেবা যুক্ত করা হচ্ছে। দু’টি কম্পিউটারের একটি থাকবে অফিসে অন্যটি রাখা হবে পাঠকদের টেবিলে। ওই কম্পিউটারের মাউসে ক্লিক করেই পাঠকেরা যেনে নিতে পারবেন তাঁর চাহিদা মতো বইটি। সেটি আদৌ গ্রন্থাগারে রয়েছে কি না বা কে সেটা নিয়ে গিয়েছেন, কবে সেটি জমা পড়বে তা একজন পাঠাক মাউসে ক্লিক করলেই কম্পিউটারের মনিটরে দেখতে পাবেন।
জেলা গ্রন্থাগার দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার যে ১৯টি গ্রন্থাগারকে ডিজিটাল পরিষেবার অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে ওসব গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিকদের সম্প্রতি স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরি ও জেলা লাইব্রেরিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাঠকদের গ্রন্থাগারমুখী করার জন্য রাজ্য সরকার গ্রামীণ ও মডেল গ্রন্থাগারগুলিকে ঢেলে সাজাতে শুরু করেছে। সেজন্য ওসব গ্রন্থাগারেও কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গ্রন্থাগারগুলিকে ডিজিটাল পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত করেও কর্মীর অভাবে কার্যত সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা যাচ্ছে না। বালুরঘাট জেলা লাইব্রেরি, গঙ্গারামপুর টাউন লাইব্রেরি, কুশমণ্ডি মডেল লাইব্রেরিতে পরিষেবা উন্নত হলেও জেলার অধিকাংশ গ্রন্থাগার কর্মী সংকটে ভুগছে।