নিজস্ব প্রতিনিধি, নন্দীগ্রাম: ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশ হয়নি এখনও। কিন্তু তার মধ্যেই নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নন্দীগ্রামের তেখালির মাঠের সভামঞ্চ থেকে প্রার্থী ঘোষণা কর দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জানালেন, এবার নন্দীগ্রামে তিনিই প্রার্থী। এই প্রথম নন্দীগ্রামে অধিকারীদের ছাড়াই সভা করছেন মমতা। আজ, সোমবার অধিকারী গড়ে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, নন্দীগ্রাম আমার সবথেকে লাকি জায়গা। ২০২১ নির্বাচনে এখান থেকেই জিতবে তৃণমূল। নন্দীগ্রাম থেকে শুরু হল তৃণমূলের জেতার পালা। এখনও কারও নাম বলছি না। পরে বলব। একজন ভাল মানুষকে দেব। যিনি সত্যিকারের আপনাদের পাশে থেকে কাজ করবেন। আচ্ছা, আমিই যদি নন্দীগ্রামে দাঁড়াই কেমন হয়। ভাবছিলাম। কথার কথা। একটু বললাম। একটু ইচ্ছে হল। এটা আমার ভালবাসার জায়গা। সভামঞ্চের সামনে থাকা হাজার হাজার মানুষ তখন এক নিশ্বাসে তাকিয়ে রয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমোর দিকে। ততক্ষণে মমতা সুব্রত বক্সিকে ডেকে বলেন, ‘আমি সুব্রত বক্সিকে অনুরোধ করব, এটা আমার ইচ্ছে হয়েছে। আমার মনবাসনা। এরপরই সুব্রতবাবু মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আমাদের সকলের সামনে যে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তা আমরা দলের পক্ষ থেকে তা গ্রহণ করলাম। এরপরই মমতার জয়ধ্বনিতে মেতে ওঠেন সভাস্থলে উপস্থিত থাকা মানুষজন। করতালিতে ফেটে পড়ে চারিদিক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নন্দীগ্রামে তৃণমূলের নতুন জন্ম হল। তবে নির্বাচনের আগে খুব বেশি সময় দিতে পারব না। কারণ, ২৯৪ আসনেই আমাকে লড়তে হবে। কিন্তু নির্বাচনের পর সমস্ত কাজ করে দেব। ভবানীপুরকেও অবহেলা করব না। ওটাও আমার ভালবাসার জায়গা। ওখানেও ভালো প্রার্থী দেব। পারলে দুটি কেন্দ্র থেকেই দাঁড়াব। ভবানীপুর আমার বড়বোন আর নন্দীগ্রাম মেজবোন। আজ সভায় উঠে আসে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথাও। মমতা বলেন, নন্দীগ্রামের শহিদদের কথা কোনওদিন ভুলিনি আর ভুলবও না। অত্যাচার সহ্য করে যেভাবে আপনারা আন্দোলন করেছিলেন তার কোনও তুলনাই হয় না। নন্দীগ্রাম আমার কাছে লাকি জায়গা। ২০১৬ বিধানসভার আগে ঘোষণা করেছিলাম তৃণমূল জিতবে। এবারেও আমি এখানে দাঁড়িয়ে বলছি, ২০২১-এও তৃণমূলই জিতবে। আমি বেঁচে থাকতে বাংলাকে বিক্রি করতে দেব না। কেউ কেউ সার্ভে রিপোর্ট উল্টে দিয়েছে। অনেক মুখোশধারীরা বাংলায় এসে নাটক করছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, বিজেপির কোটি কোটি গ্রুপ আছে। ওরা মিথ্যা অপপ্রচার করে। টাকার জোরে কালোকে সাদা আর সাদাকে কালো করে। কটাক্ষের সুরে বলেন, বিজেপি এখন ওয়াশিং পাউডার ভাজপা।
তৃণমূল ছাড়ার আগে পর্যন্ত নন্দীগ্রামের বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজের খাসতালুক থেকেই ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছিলেন তিনি। এবার সেই আসনেই নিজে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, অধিকারী পরিবারকে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি ভোটে পর্যুদস্ত করার জন্যই মমতার এই রণকৌশল।