কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
কেন্দ্রের সরকার যেসব উন্নয়নমূলক প্রকল্প রূপায়িত করেছে, তাতে সারা দেশের মানুষ উপকৃত হলেও বাংলা একমাত্র বঞ্চিত। বুধবার রাজ্যে জোড়া নির্বাচনী প্রচার সভায় এমনটাই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তার জেরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে উন্নয়নের ‘স্পিড ব্রেকার’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। এদিন মুখ্যত তারই জবাব দিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের তুলনার পাশাপাশি দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বিঁধেছেন মোদিকে। মমতা সরকারকে গরিব বিরোধী বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অমিতবাবু এদিন কেন্দ্রীয় সংস্থার পরিসংখ্যান দিয়ে তা খারিজ করে দেন।
নোট বাতিলের পর সবার আগে মমতাই প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ ছিল, এতে সাধারণ মানুষ যেমন বিপাকে পড়েছে, তেমনই এর নেপথ্যে বড়সড় দুর্নীতি রয়েছে। মমতার সেই সন্দেহই যেন মান্যতা পেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ফিনান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট’ বা এফইইউ এর নথিতে। সেই নথি অনুসারে ২০১৩-’১৪ সালে গোটা দেশে প্রায় ৬২ হাজার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছিল। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নোটবন্দির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর ওই ধরনের সন্দেহজনক লেনদেনের সংখ্যা বেড়ে যায় অস্বাভাবিক হারে। ২০১৬-’১৭ সালে ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এফইইউ-এর ডিরেক্টর পঙ্কজ মিশ্রের দেওয়া ওই পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করে অমিতবাবুর প্রশ্ন, এটা কি কালোকে ধোলাই করে সাদা টাকা করার প্রকল্প ছিল? উল্লেখ্য, তৃণমূল তার নির্বাচনী ইস্তাহারে দিল্লিতে নতুন সরকার হলে নোট বাতিলের নেপথ্যে দুর্নীতির তদন্ত করবে বলে উল্লেখ করেছে। এই বিপুল সংখ্যক সন্দেহজনক লেনদেনের মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে এফইইউ। অমিতবাবুর মতে, এখনও মূল তদন্তই শুরু করতে পারেনি। অর্থাৎ কেন্দ্রের শাসক ঘনিষ্ঠরা এর সঙ্গে জড়িত থাকলে তা চাপা পড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর দাবি, নোট বাতিল পুরোটাই একটা বড় ধরনের ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, নোট বাতিলের আগে ২০১৪ সালে দেশের গড় জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার ছিল ৮.৫ শতাংশ। নোট বাতিলের পরের বছর তা নেমে যায় ৬.৭ শতাংশে। মেক ইন ইন্ডিয়া নিয়ে মোদির দর্পচূর্ণ করেছে নোট বাতিল। কেননা ২০১৫-’১৬ সালে ৯. ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধির হার ২০১৭-’১৮ সালে হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৯৮ শতাংশে। উৎপাদন শিল্পে ২০১৫-’১৬ সালে ১৩.০৬ শতাংশ থেকে ২০১৭-’১৮ সালে বৃদ্ধির হার ব্যাপক কমে গিয়েছে। ওই বছরে উৎপাদন শিল্পের বৃদ্ধির হার হয়েছিল ৫.৯৩ শতাংশ। ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ ছিল দুই লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৭-’১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১০ লক্ষ কোটি টাকা। এই পরিসংখ্যান দিয়ে অমিতবাবুর দাবি, যারা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কোটি কোটি টাকা মেরে পালিয়ে গেল বিদেশে, তা আদতে এই কেলেঙ্কারির হিমশৈলের চূড়ামাত্র। এর সব কিছুর মূল লুকিয়ে আছে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে।