কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
এবার সাগরে স্নানের জন্য এসেছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। তাঁদের ঘিরে রোজগারের আশায় বিভিন্ন উপকরণ যথা ফুলমালা, সিঁদুর, ধূপকাঠি, ডাব, ছোট বেল, কামরাঙা, আমপাতা, বেলপাতা, খড়, বাছুর, প্লাস্টিকের চাদর, বোতল, মুড়ি-মুড়কি নিয়ে পুণ্যার্থীদের পাশে পাশে ঘুরঘুর করছে অনেকেই। উপকরণের গুণাগুণ নিয়ে বলে যাচ্ছে। কিশোরদের একটি বড় দলকে দেখা গিয়েছে সমুদ্রতট ধরে জলের মধ্যে সারাক্ষণ দড়ি বাঁধা কাঠচুম্বক নিয়ে এ’প্রান্ত থেকে ও’প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে বেড়াতে। পুণ্যার্থীরা যখনই প্রণাম ঠুকে জলে পয়সা ছুঁড়েছেন, সঙ্গে সঙ্গে সেই চুম্বক নিয়ে পয়সা তুলে আনার জন্য সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আরও একদলকে বড় বস্তা নিয়ে জলে ভাসিয়ে দেওয়া ডাব, নারকেল, আপেল সংগ্রহ করার কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে। সেই সব আস্ত ডাব, নারকেল, ফল সংগ্রহের পর বাইরে বাজারে বিক্রির জন্য চালান করছে তারা। বিনা পুঁজিতে পুণ্যার্থীদের ফেলে দেওয়া জিনিস বেচে ভালোই রোজগার।
সাগরতটে দেখা ফুল বিক্রেতা মৃণাল সরকারের সঙ্গে। মেদিনীপুরে বাড়ি। বললেন, এখানে একজন পাইকার রয়েছে। এই সময় তার অধীনে একশোর বেশি ছেলে কুচো গাঁদা ফুল, ছোট বেল, ধুপকাটি বিক্রি করে। পাইকার পুরো জিনিসপত্র দিয়ে দিচ্ছে। এবার যে যত বিক্রি করছে, তার উপর কমিশন। বাছুরের লেজ ধরে রোজগার অনেকদিন ধরে হচ্ছে। তবে এবার আরও সংগঠিতভাবে হয়েছে। ছ’শোর বেশি লোককে এবার দেখা গিয়েছে এই কাজে। একটি গোষ্ঠী সাগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সময় বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাছুর ভাড়া নেয়। বাছুরগুলিকে শান্ত রাখার জন্য রীতিমতো ট্রেনিং দেওয়া হয়। কারণ, কেউ লেজ টানছে কেউ প্রণাম করছে। সেই সময় বাছুর রেগে গিয়ে চলে গেলে পুণ্যার্থীরা অসন্তুষ্ট হতে পারেন। সেজন্য লিজ-গ্রহীতাদের সঙ্গে রেখে বাছুরদের চারদিন ধরে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। এমনই জানালেন চৈতন্য মণ্ডল। ধবলাহাটের বাসিন্দা চৈতন্য তাঁর জামাইবাবুর হাত ধরে মেলায় কামাই করতে এসেছেন। তাঁর কথায়, বাছুর পিছু তিন হাজার টাকা লিজ হিসেবে দিতে হয়েছে। আমরা তিনটি বাছুর লিজ নিয়েছি। বললেন, এখন মোবাইল আর হোয়াটসঅ্যাপের দৌলতে লেজ ধরে বৈতরণী পারের বিষয়টি মানুষ বিশ্বাস করতে চায় না। গো-দানের নামে ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা ভক্তের মন বুঝে নিতে হয়। মাঝে মাঝে সমস্যা হয়। মেলায় নাগা সাধুর পোশাক পরে একাধিক ঠকবাজ চেলা ভীষণ সক্রিয় ছিল। সরল তীর্থযাত্রী দেখলেই জয় ভোলানাথ বলে নানা ভেল্কি দেখিয়ে টাকা আদায় করতে দেখা গিয়েছে। ৫ নম্বর ঘাটের কাছে এক ঠগবাজ নাগা চেলা রানাঘাটের বিজন মাইতির আঙুলের সোনার আংটি হাতিয়ে নিয়ে মুখে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। চোখের সামনে এমন ঘটনা ঘটে গেল। হতচকিত বিজনবাবু কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। বার বার তা চেয়ে পাচ্ছিলেন না। চেলাটি হিন্দিতে বিজনবাবুর মাথায় আশীর্বাদের হাত তুলে বলছে, এ আংটি এখন আমার। সাধুকে দিলে নিতে নেই। শেষ পর্যন্ত বিজনবাবু ধমক দিয়ে পুলিস ডাকার কথা বলতেই মুখ থেকে বেরিয়ে এল দাঁত দিয়ে চিবিয়ে ফেলা আংটির পিণ্ডটি।