অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়: ফসল উৎপাদনের পর ঠিকমতো সংরক্ষণ করতে না পারলে মজুত খাদ্যশস্যের প্রায় ১০-১৫ ভাগ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যশস্যে বর্জ্য পদার্থ মিশে শস্যের গুণমান ও বাজারদর কমতে পারে। হিসেব করে দেখা গিয়েছে, খাদ্যশস্য ঠিকমতো সংরক্ষণের অভাবে প্রতি বছর অন্তত ১০ শতাংশ মজুত ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চাষিদের লাভের একটা বড় অংশ ঘরে ওঠে না। স্বাভাবিকভাবে চাষিদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শস্য সংরক্ষণ করতে হবে সঠিক নিয়ম মেনে। মাঠ থেকে ফসল কাটার পর তা সাধারণত গোলঘরে, গুদামে, মাটির আধার বা চটের বস্তায় মজুত করে রাখা হয়। কিন্তু এভাবে রাখার ফলে পোকা ও ছত্রাকের আক্রমণ, পোকার বর্জ্য পদার্থ, মৃত পোকা, পোকার খোলস প্রভৃতি মিশে নষ্ট হয় ফসলের গুণমান। গুদামে কীটশত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের উপায় খোঁজার পাশাপাশি গুদাম, গোলা বা শস্যাধার যতদূর সম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখতে হবে। মেঝে ও দেওয়ালের ফাঁকা জায়গা বুজিয়ে ফেলতে হবে। ফসল কাটার পর বীজ ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। পুরনো শস্যের অবশিষ্টাংশ থাকলে তা রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে তার পর গুদামজাত করতে হবে। বীজ মজুত করার আগে গোলাঘরের দেওয়াল, ড্রাম প্রভৃতি ম্যালাথিয়ন ৫০ ইসি প্রতি লিটার জলে ১০ মিলি হারে গুলে ওই দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। নিমপাতা বা নিশিন্দা পাতা শস্যের বস্তার মধ্যে রাখলে পোকার আক্রমণ অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়। রায়ায়নিক দমন ব্যবস্থায় অ্যালুমিনিয়িাম ফসফাইড বড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলি কাগজের খামে কিনতে পাওয়া যায়। বায়ু নিরোধক ড্রামে ব্যবহার করলে ৫০০ কেজি বীজের জন্য ১০ গ্রামের খাম লাগবে। বায়ু নিরোধক অবস্থায় ৩-৭ দিন রাখতে হবে। ছত্রাক, জীবাণুর আক্রমণে ফসলের গুণগত মান খারাপ হয়ে যায়। ফলে বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে প্রতিরোধের উপায়, রোদে ভালো করে শুকিয়ে তার পর গুদামে রাখতে হবে। জলীয় বাষ্প থাকলে ছত্রাকের কারণে বীজ তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।