কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
রূপ, স্বাদ ও গন্ধে মুর্শিদাবাদের আমের বিশ্বজোড়া খ্যাতি রয়েছে। জেলার লালবাগ, জিয়াগঞ্জ, ভগবানগোলা, লালগোলা, জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান প্রভৃতি এলাকায় দুই শতাধিক ছোটবড় আমবাগান রয়েছে। যদিও নবাবি তালুক মুর্শিদাবাদ শহরে আমবাগানের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। মুর্শিদাবাদের ইতিহাস সংক্রান্ত বিভিন্ন বই থেকে জানা যায়, নবাবরা আম ভালোবাসতেন। তাঁরা আম বিশেষজ্ঞ ছিলেন। সারাবছর ধরে আমগাছের দেখভাল ও পরিচর্যা করতেন। কলম ও সংকরায়ণের মাধ্যমে বিভিন্নরকম আম উৎপাদন করেছিলেন। নবাবদের সময়ে মুর্শিদাবাদের প্রায় ১৫০প্রজাতির আম চাষ হতো বলে জানা যায়। সংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে নবাবি আমলের অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১০০রকমের আমগাছ রয়েছে মুর্শিদাবাদে। জানুয়ারি মাসেই আমগাছে মকুল আসতে শুরু করে। তাই মুকুল আসার আগে থেকে শুরু হয় আম গাছের পরিচর্যা। আম চাষিদের বক্তব্য, জানুয়ারি মাস থেকে আমগাছ ‘গর্ভধারণ’ করতে শুরু করে। সেজন্য গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টির প্রয়োজন হয়। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে বাগানগুলিতে গাছের পরিচর্যা যেমন গাছে থাকা পরগাছা বা আগাছা ও শুকনো ডালপালা পরিষ্কার করা হয়। তবে সব প্রজাতির গাছে একসঙ্গে পরিচর্যা শুরু হয় না। আগাম মুকুল আসে অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে মুকুল দেখা দেয়, এমন আমগাছগুলির আগাম পরিচর্যা শুরু হয়। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মুকুল আসে, এমন গাছে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পরিচর্যা শুরু হয়।
আমচাষি বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, ভালো ফলনের জন্য মুকুল আসার আগে পুষ্টি জোগানোর কাজ শুরু করতে হয়। আমগাছে উপরের দিকে সাধারণত দু’ধরনের পরগাছা দেখা যায়। এই পরগাছা আম গাছের মধ্যে চোষক প্রবেশ করিয়ে পুষ্টিরস শোষণ করে। ফলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে আমগাছ কমজোরি হয়ে পড়ে। তাই আগাছা দমন এবং শুকনো ডালপালা পরিষ্কার করতে হয়। মুকুল দেখা দিলে গাছে প্রথম কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। আম যখন মার্বেল আকারের হয়, তখন বৃষ্টি না হলে মাসে একবার সেচ দিতে হয়। মুর্শিদাবাদ জেলায় বৈশাখী নামে আমগাছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রথম মুকুল দেখা যায়। বৈশাখীর পরে সারেঙ্গি, বীরা, পাঞ্জাপসন্দ এইভাবে শেষে রানিপসন্দ প্রজাতির আমগাছে মুকুল দেখা দেয়।
জেলার আরএক আম চাষি মোক্তার আলি বলেন, গতবছর আমের অফ ইয়ার ছিল। তবে এবার যে আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে, তাতে আমের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাজেই চলতি বছরে আমের অন ইয়ার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক তাপস রায় বলেন, গাছে মুকুল আসার আগের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের পক্ষ থেকে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।