সংবাদদাতা: মেঘলা আবহাওয়ায় সর্ষে ক্ষতি হয়। জাব পোকা এই সময় আক্রমণে নামে। এ কারণেই সর্ষে চাষ করতে হয় জ্যাঠো করে। তেলের দর এখন চড়া। বীজ হিসাবেও সরষে একটি লাভজনক চাষ। উপযুক্ত সময় কার্তিক মাস। তবে অগ্রহায়ণের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বীজ বপন করা যায়। সেখানে পরিচর্যা নিতে হবে বেশি করে। জমির অবস্থান, সেচের সুবিধা ও বোনার সময় অনুযায়ী তৈলবীজ শস্যের সঠিক জাত নির্বাচন করতে হবে। মাটির স্বাস্থ্যরক্ষায় এবং ফলন বৃদ্ধির জন্য মাটিতে জৈবসার ও জীবাণুসার প্রয়োগ করতে হবে। বিঘা প্রতি জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। জীবাণুসার দুই কেজি প্রতিবিঘায় রাসায়নিক সার দেওয়ার দু’দিন আগে অথবা পরে ঝুরঝুরে গোবরসারের সঙ্গে বিকেলবেলায় প্রয়োগ করতে হবে। বিকল্প হিসাবে প্রতিবিঘায় অন্ততপক্ষে ৭০ কেজি চুন ফসল বোনার ২১ দিন আগে প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে ভিজেভাব থাকলে তবেই ভালো কাজ করে। তৈলবীজ চাষে গন্ধকের ভালো ভূমিকা রয়েছে। তাই ফসফেট হিসেবে সবসময় সিঙ্গল সুপার ফসফেট ব্যবহার করতে হবে। বীজ বোনার আগে প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ৩ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম ৫০ শতাংশ বা ম্যানকোজেব ৭৫ শতাংশ জাতীয় ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে। প্রতিবিঘায় ১.৩ কেজি ভালোমানের বোরন ১০.৫ শতাংশ টোরি, রাই, শ্বেত সর্ষে প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে প্রয়োগ ও পাতায় স্প্রে না করলে দানা পুষ্ট হবে না অথবা কুঁচকে যেতে পারে। তাতে ফলন কম হবে।
মূলত টোরি, শ্বেত ও রাই সর্ষের বেশ কয়েকটি জাত চাষ করা যেতে পারে। টোরি সর্ষের পাঞ্চালি, অগ্রণী, কম্পোজিট ৩ প্রভৃতি। শ্বেত সর্ষের বিনয়, সুবিনয়, ঝুমকা, পুসা, কল্যাণী প্রভৃতি। রাই সর্ষের সীতা, ভাগীরথী, সরমা, সংযুক্ত (অসেচ) ভালো জাত। প্রতিবিঘায় ১ কেজি করে বীজ বোনা উচিত। বীজ বোনার সময় আশ্বিনের শেষ সপ্তাহ থেকে অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি। ৭০ দিন থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তুলতে পারবেন কৃষকরা। সারি করে লাগালে ফলন ভালো পাওয়া যেতে পারে। সারি থেকে সারির দূরত্ব এক ফুট রাখা উচিত। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব রাখা উচিত চার ইঞ্চি। ছিঁটিয়ে বুনলে প্রতি বর্গমিটারে ৩৫ থেকে ৪০টি গাছের চারা রাখতে হবে। মাথাভাঙা মহকুমা কৃষি আধিকারিক গোপালচন্দ্র বর্মা বলেন, টোরি সর্ষে চাষে প্রথম পর্যায়ে ৯.৪ কেজি ইউরিয়া, ৪.৭ কেজি ফসফেট এবং ৪.৭ কেজি পটাশ প্রতি বিঘায় দিতে হবে।