নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৃহস্পতিবার সকালে ইস্ট বেঙ্গলের প্র্যাকটিসে স্প্যানিশ কোচ আলেজান্দ্রো ঘন ঘন ডেকে নিচ্ছিলেন সিয়াম হাঙ্গালকে। শুক্রবার ইন্ডিয়ান অ্যারোজের বিরুদ্ধে কাসিম আইদারাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন লালরিনডিকা রালতের পরিবর্ত হিসাবে নেমে তাঁর ভূমিকা কী হবে? ইস্ট বেঙ্গলে অধিকাংশ কর্নার কিংবা ফ্রি-কিক নিয়ে থাকেন লালরিনডিকা রালতে। এদিন তাঁর জায়গায় কোলাডোকে কর্নার নিতে দেখা গেল। চলতি মরশুমে দলের নিয়ন্ত্রণ ইস্ট বেঙ্গলের সাবেক কর্তাদের হাতে নেই। প্র্যাকটিসে দু’একজন ছাড়া ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের কোনও প্রতিনিধি চোখে পড়ে না। কোয়েসের কর্মীরা অবশ্য ছিলেন। ইস্ট বেঙ্গল কোচের সাংবাদিক সম্মেলনে দেখা গেল চার স্প্যানিশ ফুটবলারকে। আলেজান্দ্রোর সঙ্গে ছিলেন তাঁর সহকারী তথা দোভাষী মারিও, মিডিও কোলাডো, ফিজিও কার্লোস। দেখে মনে হচ্ছিল শুক্রবার ইন্ডিয়ান অ্যারোজের বিরুদ্ধে খেলা ‘স্প্যানিশ বেঙ্গলের।’
গত সোমবার চেন্নাই সিটি এফসি’র বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও জিততে পারেনি ইস্ট বেঙ্গল। আগামী ২৭ জানুয়ারি মোহন বাগানের বিরুদ্ধে ফিরতি ডার্বি ম্যাচ খেলতে নামার আগে আজ তিন পয়েন্ট তুলে নিয়ে ফের খেতাবি দৌড়ে ঢুকতে চাইছেন আলেজান্দ্রো। এখনও চেন্নাইয়ের দলটি ইস্ট বেঙ্গলের থেকে পাঁচ পয়েন্টের অ্যাডভানটেজে আছে। কিন্তু আলেজান্দ্রো বলছেন,‘দীর্ঘ লিগে পাঁচ পয়েন্টের অ্যাডভানটেজ এমন কিছু নয়। ওদের এখনও আটটি ম্যাচ বাকি। আমাদের ন’টি। শুক্রবার তিন পয়েন্ট পেলেই আমরা লিগ টেবলে কয়েক ধাপ উঠে আসব। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও হেরেছি আমরা। অনেকেই মাঝমাঠের ত্রুটির কথা বলছেন। আমরা শুক্রবার সেই দোষক্রুটি শুধরে নেব।’ গত দুটি ম্যাচে লেফট ব্যাক মনোজ মহম্মদ মোটেই ভালো খেলতে পারেননি। চেন্নাই জয়সূচক গোলটি পায় মনোজের ভুলেই। এই প্রসঙ্গ উঠলে আলেজান্দ্রো ইস্ট বেঙ্গলের লেফটব্যাককে আড়াল করে বলেন,‘গোল তো কারও দোষেই হয়। আমরা চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম গোলটি খাই ডিফ্লেকশনে। তাছাড়া মনোজ অনূর্ধ্ব-২২ কোটায় খেলছে। এটাও মাথায় রাখতে হবে। মনোজকে বোঝানোর কাজও চলছে।’
স্টপার জনি অ্যাকোস্টার তিনটি হলুদ কার্ড আছে। আজ হলুদ কার্ড দেখলে জনি অ্যাকোস্টা ২৭ জানুয়ারি ডার্বিতে খেলতে পারবেন না। অ্যারোজ দলে তো বিদেশি নেই। আপনি জনি অ্যাকোস্টাকে খেলিয়ে কি ঝুঁকি নেবেন? স্প্যানিশ কোচ বললেন, ‘জনি-বোরহার স্টপার জুটি ভাঙতে যাব কেন? জনি বিশ্বকাপার। পরিস্থিতি অনুসারে খেলবে। সতর্ক ভাবে খেলতে বলা হয়েছে ওকে।’ ইস্ট বেঙ্গলের বিকল্প স্টপার হিসাবে আছেন কিংশুক দেবনাথ। দলে সুযোগ না পাওয়ায় তাঁর নামই ভুলে গিয়েছেন ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকরা। অনূর্ধ্ব-১৭ ফিফা বিশ্বকাপে খেললেও অনিকেত যাদব, রহিম আলি, জিতেন্দ্র সিংরা কোনও দিন যুবভারতীতে খেলেননি। বিদেশের মাঠে ২১টি স্টেডিয়ামে খেলতে গেলেও দেশের সেরা স্টেডিয়ামে তাদের খেলার সৌভাগ্য হয়নি। কারণ জুনিয়র বিশ্বকাপে ভারতের কোনও ম্যাচ শহরে হয়নি। গত বছর অ্যারোজের বিরুদ্ধে মোহন বাগান নিজেদের মাঠে খেলেছিল। ইস্ট বেঙ্গল খেলেছিল বারাসত স্টেডিয়ামে। জিতেন্দ্রদের স্বপ্ন আজ পূরণ হতে চলেছে। যুবভারতীতে খেলার সুযোগের জন্য বাড়তি উদ্দীপ্ত জিতেন্দ্ররা। জুনিয়র বিশ্বকাপারদের পাশে সদ্য নতুন প্রতিভা বীরপ্রতাপ সিং, আশিস রাই, রহিত দানু, প্রভসুখান গিলদের দিকেও নজর থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের। দলের কোচ ফ্লয়েড পিন্টো বললেন,‘আমরা ‘ফিজিক্যাল’ ফুটবল খেলব। কারণ ভুবনেশ্বরে ওরা আমাদের বিরুদ্ধে বেশ টাফ খেলেছিল। ওদের পাঁচ বিদেশি থাকলেও ভয় পাচ্ছি না।’
 যুবভারতীতে খেলা শুরু বিকেল পাঁচটায়।