কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
পুরভোটের দামামা বাজতেই তাই পুরাতন মালদহে কার্তিক গোষ্ঠী ও বিভূতি গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াইয়ের ইতিহাস অবশ্য বহু পুরোনো। বিভূতিভূষণ ঘোষের অনুগামীরা তাঁকেই চেয়ারম্যান প্রোজেক্ট করেই এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন। কার্তিক অনুগামী শিবিরও থেমে নেই। তাঁরাও কার্তিকবাবুকে আগামীদিনের চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাইছেন। কাকা-ভাইপো গোষ্ঠীর ঠান্ডা লড়াইয়ের মাঝে আবার সম্প্রতি তৃতীয় একটি গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তৃণমূলের দাপুটে কাউন্সিলার বশিষ্ট ত্রিবেদী এবং তৃণমূল নেতা অসীম ঘোষকেও কেউ কেউ ভাবী চেয়ারম্যান প্রোজেক্ট করে প্রচার শুরু করেছে। ভোটের আগে একই শহরের দুই তাবড় নেতার পাশাপাশি অন্যান্য নেতা কাউন্সিলারদের এই ‘তৎপরতা’ নিয়ে এলাকায় চর্চা শুরু হয়েছে। শহরের রাজনৈতিক মহলেরও সেই দিকেই নজর রয়েছে।
এবিষয়ে পুরাতন মালদহ পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেসের কার্তিক ঘোষ বলেন, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডেই কেউ না কেউ কারও না কারও অনুগামী। তারা তো নিজেদের কাছের লোককেই তুলে আনতে চাইবে। এটা নতুন কথা নয়। তবে চেয়ারম্যান পদ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা বলেন। আমি ওই পদে থাকাকালীন শহরে যা উন্নয়ন হয়েছে, তা অভাবনীয়। এটা আমার মুখের কথা নয়। এলাকায় গেলে মানুষ নিজেই বাস্তব সত্য তুলে ধরবেন।
এবিষয়ে প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিভূতিভূষণ ঘোষ বলেন, এখন সবে খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এখনই এত উৎসাহিত হওয়ার কিছু নেই। দেখা গেল, আমার ওয়ার্ড চূড়ান্ত তালিকায় মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গেল। তখন তো আমি আর দাঁড়াতে পারব না। যারা আমাকে চেয়ারম্যান পদে তুলে ধরে প্রচার করছে, সেটা তাদের মনের কথা। তবে এটা নিশ্চিত যে তৃণমূলই পুরসভায় ফের ক্ষমতায় আসবে ।
শহর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নবরঞ্জন সিনহা বলেন, ভোট এলে এধরনের চর্চা হয়েই থাকে। তবে দল এখনও কাউকে চেয়ারম্যান প্রোজেক্ট করেনি। আমাদের মধ্যে এনিয়ে আলোচনাও হয়নি। গোষ্ঠী কোন্দলও নেই যে পরস্পর বিরোধী প্রচার চালাবে। এই মুহূর্তে দল ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
তৃণমূলের কাউন্সিলার বশিষ্ট ত্রিবেদী বলেন, কেউ বললেই তো আর কেউ চেয়ারম্যান হয়ে যাওয়া যায় না। এখানে দলই শেষ কথা বলে। তৃণমূল নেতা অসীম ঘোষ বলেন, আগে ভোটে জিতে আসি। তারপরে কথা বলব। এখন একটু সাসপেন্স থাকা ভালো।
গত পুর নির্বাচনে প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিভূতিভূষণ ঘোষ নির্দল প্রার্থীর কাছে হেরে গিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। সেই সুযোগে কার্তিকবাবুর চেয়ারম্যান পদে আত্মপ্রকাশ হয়। তাঁরা সম্পর্কে কাকা-ভাইপো হলেও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সম্পর্কে চিড় ধরে। দুই শিবির কার্যত ভাগ হয়ে যায়। কার্তিকবাবুর উত্থানে বিভূতিভূষণ ঘোষ প্রচারের বাইরে চলে যান। সম্প্রতি, পুর নির্বাচন নিয়ে আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হতেই বিভূতি শিবির আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই দুই যুযুধান নেতার খাসতালুক, ৯ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষণের আওতায় পড়েনি। এদিকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বশিষ্ট ত্রিবেদীও দাঁড়াতে পারবেন। ১১ নম্বর ওয়ার্ড মহিলার পরিবর্তে জেনারেল হয়ে যাওয়ায় তৃণমূল নেতা অসীম ঘোষও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
বিভূতিবাবুর হয়ে চলছে প্রচার। ‘টাইগার ইজ ব্যাক’, ‘পুরাতন মালদহ শহরের জনগণ দিচ্ছে ডাক, কার্তিকদা আবার থাক’ ইত্যাদি পোস্টে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম।